Advertisement
Advertisement

Breaking News

Theft

৫ কোটি টাকা হাতিয়ে দিল্লিতে গা ঢাকা, অনলাইন শপিং করতে গিয়েই জালে বাবা-ছেলে

ধরিয়ে দিল পুলিশেরই একটি অ্যাপ।

Father-son duo stole 5 crore from Kolkata, caught during online shopping from Delhi | Sangbad Pratidin

প্রতীকী ছবি।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 28, 2023 9:20 am
  • Updated:November 28, 2023 9:24 am  

অর্ণব আইচ: ঋণের নামে কলকাতার (Kolkata) এক ব‌্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে দিল্লিতে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল পুরো একটি পরিবার। মোবাইল বন্ধ করে, সিম পালটে বহাল তবিয়তেই ছিল। দিল্লিতে বাড়ি থেকে বেরও হত না কেউ। কিন্তু অনলাইনে কেনাকাটা (Online Shopping) করতে গিয়েই বাড়ল বিপদ। অনলাইন অ‌্যাপের জিনিস সরবরাহকারীদের সঙ্গে ছদ্মবেশে গিয়েই হাতেনাতে প্রতারণার অভিযুক্ত বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করলেন মধ‌্য কলকাতার পোস্তা থানার আধিকারিকরা। পুলিশের অভিযোগ, ওই ব‌্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতালেও বড়বাজারের অন‌্যান‌্য ব‌্যবসায়ী ও ব‌্যাঙ্ক-সহ মোট প্রায় ৫ কোটি টাকা হাতিয়ে দিল্লি পালায় ওই পরিবার।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই ধৃতর মধ্যে জগদীশ দাইয়া বাবা ও আদিত‌্য দাইয়া ছেলে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাবা ও ছেলে পোস্তার কটন স্ট্রিটের এক ব‌্যবসায়ীর কাছে আসে। তারা জানায়, ব‌্যবসার জন‌্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা তাদের প্রয়োজন। ৬ মাসের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলা হয়। সেইমতো চুক্তিপত্রই তৈরি হয় ব‌্যবসায়ীদের মধ্যে। ব‌্যবসায়ীও দাইয়া পরিবারকে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা দেন। ওই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর পুরো পরিবার এসে হাজির হয় কটন স্ট্রিটে ব‌্যবসায়ীর কাছে। এবার তারা টাকা ফেরত দেওয়ার জন‌্য ব‌্যবসায়ীর কাছ থেকে এক বছর সময় চায়। নতুন করে চুক্তিপত্র তৈরি করে। সঙ্গে দাইয়া পরিবার হাওড়ায় নিজেদের জমি ও বাড়ির জমির দলিল এবং যাবতীয় নথি ব‌্যবসায়ীর হাতে তুলে দেয়। সঙ্গে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার একটি চেকও ব‌্যবসায়ীকে দেওয়া হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সোশাল মিডিয়ায় পরিচয় থেকে প্রেম, সংসার বাঁধতে ঘর ছাড়েন সমকামী দুই তরুণী! তার পর…]

এক বছর পর সেই টাকা হাতে না পাওয়ার পর তা আদায় করলে ব‌্যবসায়ী জগদীশ ও আদিত‌্যকে ফোন করেন। কিন্তু দু’জনের মোবাইল ফোন বন্ধ। সন্দেহের বশে তিনি বড়বাজারে দাইয়ার অফিসে লোক পাঠান। দেখা যায়, অফিস তালা বন্ধ। হাওড়ায় তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও তালা। তখন বড়বাজারে খোঁজখবর নিয়ে ব‌্যবসায়ী জানতে পারেন, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে স্ত্রী, ছেলে আদিত‌্য, তিন মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়েছে জগদীশ দাইয়া। তখন ওই দলিলপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাওয়ার পর জানা যায়, সেগুলি কপি মাত্র। আসল দলিল ব‌্যাঙ্কে জমা দিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ নিয়েছে দাইয়ারা। মোট ঋণের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকার বেশি। ওই চেকটি জমা দেওয়ার পর সেটিও বাউন্স করে। ব‌্যবসায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব‌্যবস্থা নেওয়ার জন‌্য আদালতে আবেদন জানান। আদালতের নির্দেশে গত অক্টোবরে পোস্তা থানার পুলিশ প্রতারণার মামলা শুরু করে। পুলিশ দাইয়াদের পরিচিত কয়েকজন ব‌্যক্তির মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে।

[আরও পড়ুন: লোকালে জুড়ছে প্রথম শ্রেণির কামরা, ভাড়া পাঁচ গুণ, কী বলছেন যাত্রীরা?]

জানা যায়, দাইয়ারা দিল্লি থেকে অন‌্য মোবাইল (Mobile) ও সিমকার্ডের মাধ‌্যমে যোগাযোগ রাখছে। কিন্তু পুলিশ তাদের ঠিকানা জানতে পারেনি। দাইয়া পরিবারের কেউ বাড়ি ছেড়ে বের হত না। সবকিছুই অর্ডার দিত অনলাইনে। যে মোবাইল নম্বর থেকে তারা কলকাতায় যোগাযোগ করে, সেই নম্বর থেকেই তারা অনলাইনে অর্ডার করত। সেই তথ‌্য জানতে পেরে পুলিশ অনলাইনে সরবরাহকারী একটি অ‌্যাপের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

সম্প্রতি অ‌্যাপের (App) পক্ষ থেকে পোস্তা থানাকে জানানো হয়, ফের কিছু নিত‌্যপ্রয়োজনীয় জিনিস অর্ডার দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়েই কলকাতা থেকে দিল্লিতে পৌঁছয় পুলিশের টিম। রবিবার সরবরাহকারীদের সঙ্গে ছদ্মবেশে দিল্লিতে দাইয়াদের বাড়িতে পৌঁছন দুই পুলিশ অফিসার। পরিবারের একজন বেরিয়ে জিনিস নিতেই তাঁকে দাইয়াদের ব‌্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়। তাঁর উত্তরে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, দাইয়ারা বাড়িতেই লুকিয়ে আছে। জগদীশ ও আদিত‌্যকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার রাতে ধৃত বাবা ও ছেলেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement