রাহুল রায়: বছর তিরাশির বৃদ্ধা দিদি। বারংবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পাঁচ বোনের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দিদির ছেলে ও ছেলের বউ। দিদির সঙ্গে দেখা করতে দিতে চান না তাঁরা। এই মামলায় মানবিক হল হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুলিশকে সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিলেন বিচারপতি শম্পা সরকার। কিন্তু আদালত মানবিক হলেও, ‘মনুষত্বের’ কাছে হার মানল বিচারপতির নির্দেশ!
জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশকে উপেক্ষা করে বোনকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি তাঁর দিদির সঙ্গে। উদ্দেশ্য যাই থাকুক না কেন, যেখানে অসুস্থ বৃদ্ধা দিদিকে দেখার জন্য বোনকে অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট, তা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে বোনকে দেখা করতে না দেওয়ায় কাঠগড়ায় ছেলে ও ছেলের বউ। তাঁদের বিরুদ্ধে এবার আদালত অবমাননার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা বোন জয়িতা পাল।
মামলকারীর তরফে আইনজীবী অরুণকুমার মাইতি জানান, “বেহালা থানা এলাকার বাসিন্দা অসুস্থ-শয্যাশায়ী মীরা বোস (৮৩)। থাকেন ছেলে-বউয়ের কাছে।” অভিযোগ, কারও সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয় না তাঁকে। এমনকী, তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয় না। পাঁচ বোনের কেউ দিদির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেই ছেলে-বউ বাধা হয়ে দাঁড়ান। আরও অভিযোগ, ঠিকমতো দেখভালও করা হয় না তিরাশির বৃদ্ধাকে। কেন?
পাছে তিনি যদি অবহেলার কথা সবইকে জানিয়ে দেন। আরও আশঙ্কা, বিষয় সম্পত্তি নিয়ে। ছেলে-বউয়ের পরিবর্তে যদি লিখে দেন অন্য কারও নামে। অথচ মায়ের পেনশনের সুবিধা পান অভিযুক্ত ছেলে-বউ। মোদ্দা কথা, বৃদ্ধা মীরা দেবীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না কাউকেই। পুলিশের দ্বারস্থ হলে, পুলিশের বক্তব্য ছিল এটা পারিবারিক ব্যাপার, তাদের কিছু করার নেই। আদালতের নির্দেশ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তাই দিদির সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা আটাত্তরের বৃদ্ধা বোন জয়িতা পাল।
মামলায় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিরাশির বৃদ্ধা দিদির সঙ্গে বছর আটাত্তরের বোনকে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। বিচারপতি শম্পা সরকারের নির্দেশ ছিল, দিদির সঙ্গে বোনের দেখা করায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন না ছেলে ও ছেলের বউ। শর্ত ছিল, যখন দেখা করতে যাবেন, সঙ্গে থাকবেন মহিলা কনস্টেবল। কিন্তু অভিযোগ, আদালতের এই নির্দেশের পরেও দিদির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বোনকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.