Advertisement
Advertisement

প্রয়াত হোমিওপ্যাথির ‘জাদুকর’ রামকৃষ্ণ ঘোষ মণ্ডল

জ্যোতি বসু, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির চিকিৎসা করেছিলেন তিনি।

Famed Howrah homeopath passes away
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:January 25, 2019 5:41 pm
  • Updated:January 25, 2019 5:46 pm  

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: নির্মেদ শরীরে সাদা ঝুলশার্ট পাঞ্জাবি পরনে নিখাদ বাঙালি তিনি। তবে তাঁর সম্পর্কে বলতে গেলে আরও বড় সত্য হল, তাঁর প্রতিটি শিরায় হোমিওপ্যাথি। সবাই বলতেন হ্যানিম্যান রক্ত। বাঙালির গর্বের চিকিৎসক রামকৃষ্ণ ঘোষ মণ্ডল প্রয়াত হলেন শতক ছোঁয়ার দশ বছর আগেই। শুক্রবার সকাল সাতটা পাঁচ মিনিটে হাওড়ায় নিজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান এই চিকিৎসক। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, নব্বই বছর বয়সেও তেমন কোনও রোগ ছিল না। সকালে উঠে চা খেতে চেয়েছিলেন রামকৃষ্ণবাবু। তারপর বুকে ব্যথা অনুভব করেন। চিকিৎসার কোনও সুযোগই পাওয়া যায়নি। বুকে ব্যথা অনুভব করার কিছুক্ষণ পরেই মারা যান চিকিৎসক রামকৃষ্ণ ঘোষ মণ্ডল। নিজের সম্পর্কে প্রায়ই বলতেন, ‘ব্রিটিশরা গুলি করবে বললেও মাথা নোয়াইনি। তোমরা কে বাবা?’  শেষ দিনে, শেষ সময়েও হয়তো সেই মানসিক প্রত্যয়ের সাক্ষী রেখে গেলেন তিনি।

[এনআরএস হাসপাতালে কুকুর নিধনে সাসপেন্ড অভিযুক্ত দুই নার্সিং পড়ুয়া]

Advertisement

সবক্ষেত্রে পিছু হঠছে বলে যখন বঙ্গসমাজে গেল গেল রব উঠেছে, তখন রামকৃষ্ণবাবু ছিলেন অন্য ঘরানার প্রতিনিধি। তাঁর মৃত্যু শুধু হোমিপ্যাথি চিকিৎসায় নয়, বৃহত্তর সমাজে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল বলে মনে করছেন অনেকেই। গতির যুগের এখন অ্যালোপ্যাথিক ট্যাবলেট, ইঞ্জেকশনের দ্রুত সেরে উঠতে চান সকলেই। কিন্তু, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রামকৃষ্ণ ঘোষ মণ্ডলের পসার ছিল চমকে দেওয়ার মতো। রাজ্যপাল তখন গোপালকৃষ্ণ গান্ধী। রাজভবন থেকে ফোন গেল হাওড়ায় বাড়িতে। প্রবীণ চিকিৎসক নিজে মুখে জানিয়েছিলেন,  “ফোন ধরেই তো ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। বলে কি না রাজ্যপালের হোমিও কনস্যালট্যান্ট হতে হবে আমাকে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকাকালীন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি যখন সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত তখনও ডাক পড়েছিল রামকৃষ্ণবাবুর। তাঁর চিকিৎসায় সেরে ওঠার পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু  ‘জাদুকর’ বলেছিলেন রামকৃষ্ণবাবুকে। রোজ সকালে প্রবীণ এই চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন পড়ত। সাক্ষাতের সময় পেতে সময় লাগত একমাস। কিন্তু, ডাক্তারবাবুর কাছে ‘ভিজিট’ নয়, পরিষেবাই ছিল শেষ কথা। তাই শত জোরাজুরিতে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি রোগী দেখতেন না। এমনকী, ফিরিয়ে দিতেন নেতা-মন্ত্রীদেরও। তবে বছর চারেক শারীরিক কারণে আর চেম্বার বসে রোগী দেখতেন না রামকৃষ্ণবাবু।

পরাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রবাদপ্রতীম চিকিৎসক রামকৃষ্ণ ঘোষ মণ্ডল। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার স্বীকৃতির জন্য জেলেও যেতে হয়েছে। তাঁকে ‘ফ্রেন্ড, ফিলোজাফার অ্যান্ড গাইড’ বলে মানতেন হাওড়ার আর এক নামী হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ভোলানাথ চক্রবর্তী। 

[ OMG! অনলাইনে মোবাইল অর্ডার করে সাবান পেলেন বাগুইআটির দম্পতি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement