স্টাফ রিপোর্টার: জাল নথির বিনিময়ে বিক্রি হওয়া সিমকার্ড কি যাচ্ছে আইএসআই অথবা জঙ্গিদের হাতে? কলকাতা থেকে হাজারটি এই ধরনের সিমকার্ড উদ্ধার হওয়ার পর এই সন্দেহ গোয়েন্দা পুলিশেরই৷ কারণ, জেরার মুখে সিমকার্ড চক্রের পাণ্ডা একবালপুরের অঙ্কিত গুপ্তা গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে যে, কোনও বৈধ পরিচয়পত্র ছাড়াই দেড়শো বা দু’শো টাকা খরচ করলেই এই সিমকার্ড হাতে পেয়ে যেত যে কেউ৷ তাই শহরে এই অবৈধ সিমকার্ডের প্রচুর চাহিদা৷ এর আগেও দেখা গিয়েছে, আইএসআই চর ও জঙ্গিরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে এই ধরনের অবৈধ সিমকার্ড ব্যবহার করে৷ তাই একবালপুর থেকে যে সিমকার্ডগুলি ইতিমধ্যেই অঙ্কিত ও তার সঙ্গীদের হাত ধরে পাচার হয়েছে, সেগুলি জঙ্গিদের হাতে পৌঁছেছে কি না, তা নিয়েও শুরু হয়েছে তদন্ত৷ এদিকে, বৃহস্পতিবারই পাক চর সংস্থা আইএসআই সন্দেহে ফয়জল নামে তপসিয়ার বাসিন্দা এক যুবককে আটক করে জেরা করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ দিল্লিতে ধৃত পাক চরদের সঙ্গে কলকাতার যোগ রয়েছে কি না, তা জানতে দিল্লি পুলিশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা৷
একবালপুরের সিমকার্ড চক্রের পিছনে থাকা অন্তত আরও সাতজনের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছেন লালবাজারের সাইবার থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার আধিকারিকরা৷ উল্লেখ্য, বুধবার ডায়মন্ডহারবার রোডের একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় এক হাজার সিমকার্ড, ৪৫০টি আবেদনপত্র, ১ হাজার ৮০০টি জাল ভোটার কার্ড, প্রায় ওই সংখ্যারই রঙিন পাসপোর্ট ছবি, সাড়ে তিনশো জাল রবার স্ট্যাম্প৷ গ্রেফতার করা হয় একটি নামী মোবাইল সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটার অঙ্কিত গুপ্তাকে৷ পুলিশ জানিয়েছে, সিমকার্ড চক্রের সঙ্গে জড়িত পলাতকরা মূলত একবালপুর, ওয়াটগঞ্জ, গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা৷ এদের মধ্যে কারও ভূমিকা ছিল ছবি জোগাড় করা৷ কেউ বা জাল পরিচয়পত্র তৈরি করত৷ আবার কেউ সিমকার্ড ক্রেতাদের সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা করত৷ গোয়েন্দারা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এই সিমকার্ড ক্রেতাদের একটি বড় অংশই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত৷ এই ‘ভুয়া’ সিমকার্ড ব্যবহার করে এটিএম জালিয়াতিরা ফোন করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয় টাকা৷ আবার এই ধরনের সিমকার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি করে ব্যাঙ্ক জালিয়াতরা৷ এই ভুয়া সিমকার্ডে নেট ভরে ফেসবুকে জাল অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ ঘটানোর চেষ্টা করে সাইবার অপরাধীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.