সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র। আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরও ছাত্র। গর্বের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে আজ টিএমসিপি যে জঘন্য রাজনীতি করল তা লজ্জার। … সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরণের একটি পোস্ট প্রথমবার হয় বিরাজ নারায়ণ রায় নামের একটি প্রোফাইল থেকে। পোস্টে দাবি করা হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যরাই কলেজের ভিতর থেকে প্রথম ইট ছোঁড়ে এবং তারাই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙেন। নিমেষে পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। একের পর এক শেয়ার হতে থাকে। এমনকী একাধিক প্রোফাইল থেকে দেখা যায় অবিকল একই পোস্ট শেয়ার হচ্ছে।
কিন্তু ঠিক কী লেখা ছিল পোস্টে? সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পোস্টটিতে লেখা রয়েছে, আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র। আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু, আমার গর্বের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে আজ tmcp যে জঘন্য রাজনীতি করল তা লজ্জার। থাকি বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে, তাই পুরো ঘটনাটা সামনে থেকে দেখেছি। বিজেপির মিছিল শান্তিপূর্ণ ছিল। মিছিল চলার সময় কলেজের ভেতর থেকেই প্রথম ইট ছোঁড়া হয়। তারপর মিছিল বেরিয়ে গেলে tmcp-র ছেলেরাই আগুন লাগায়…।
বিদ্যাসাগর কলেজের বিধান সরণি ক্যাম্পাসে বিদ্যাসাগরের মূর্তি কলেজের একেবারে ভিতরে। সেখানে পৌঁছাতে হলে দুটো গেট পেরতে হয়। প্রথমটি লোহার গেট.. পরেরটি কাঠের। তাহলে বিজেপি কর্মীদের দুটি গেট পেরিয়ে মূর্তি পর্যন্ত পৌঁছানো কী করে সম্ভব? … পুরো ঘটনাটাই সাজানো, পরিকল্পিত। টিএমসিপি নিজেরাই বাইকে আগুন লাগায়, মূর্তি ভাঙার পর মিডিয়াকে ডেকে আনে। তারপর পুলিশ এসে লাঠি চালায়, সাধারণ পথচারীদের ধরে নিয়ে যায়…। পুরো পোস্টটি এমনভাবে লেখা যাতে বোঝা না যায় পোস্টকর্তার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় আছে। এরপর দেখা যায় একের পর এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই ছবি পোস্ট করছেন। তাদের প্রোফাইল ঘাঁটলেই বোঝা যাবে তাঁরা প্রত্যেকেই গেরুয়া শিবিরের সমর্থক।
এবার আসা যাক প্রথম পোস্টকর্তার কথায়। যে বিরাজ নারায়ণ রায় নামের প্রোফাইলটি থেকে প্রথম পোস্টটি করা হয়েছে, সেই প্রোফাইলটির আর কোনও অস্তিত্ব নেই। আজ সকালে সার্চ করে আর তাঁর প্রোফাইল খুঁজে পাওয়া যায়নি। জনৈক এক নেটিজেনের দাবি, বিরাজ নারায়ণ রায় আসলে বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্রই নয়। সে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তাঁর আসল বাড়ি কোচবিহার। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়েছে সে। তাঁর সঙ্গে বিজেপির আইটি সেলেরও যোগ রয়েছে বলে দাবি ওই নেটিজেনের। কাকতালীয়ভাবে, বিরাজ নারায়ণ সাহা নামের যে প্রোফাইলটির কথা বলা হচ্ছে, তাঁকে উদ্ধৃত করেই এই একই দাবি করেন বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সেলের প্রধান অমিত মালব্য। এতেই, বিরাজ এবং বিজেপি আইটি সেলের যোগাযোগ স্পষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.