ছবি: প্রতীকী।
সুব্রত বিশ্বাস: শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিংয়ের মধ্যেই চাকরি দেওয়ার নাম করে চলছিল প্রতারণা চক্র। চক্রের দুই পাণ্ডাকে ধরল আরপিএফের দুর্নীতি দমন শাখা। বর্ধমানের কাটোয়া এলাকার যুবক কর্ণ বিশ্বাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ধাপা আনন্দপুরের রহমান নজির ও গোবিন্দ খটিক রোডের শম্ভু মল্লিককে।
অভিযোগকারী কর্ণ বিশ্বাস নিজের অভিযোগে জানিয়েছেন, বর্ধমান এলাকার এক মহিলা নিজেকে শিয়ালদহের রেল আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়ে রেলে চাকরির প্রলোভন দেখায়। এরপর ধৃতদের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে বলেন। ধৃতরা কর্ণকে বলে শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিংয়ে এসে দেখা করতে। এরপর পার্সোনেল বিভাগের দপ্তরের সামনে রাখা বেঞ্চিতে এক খাতায় স্বাক্ষর করানো হয় তাঁকে। এরপর ‘ডিল’ অনুযায়ী বাইরে এসে দু’লক্ষ টাকা নেয় অভিযুক্তরা। এরপর ফের কথা দেওয়া আগাম টাকা নিতে এদিন ধৃত দু’জন আবার আসে। একজন ডিআরএম বিল্ডিংয়ের ভিতরে খাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্য জন রাস্তা থেকে কর্ণকে নিয়ে যায় ডিআরএম বিল্ডিংয়ের ভিতর। সেখানে ফের খাতায় সই করানোর ভান করে।
এদিকে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আরপিএফের অপরাধ দমন শাখা দু’জনকে ধরে ফেলে। ধৃতরা অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে। তাদের নারকেলডাঙা থানার হাতে তুলে দেয় আরপিএফ। এভাবে আরও কত জনের কত টাকা নিয়েছে প্রতারণা চক্রের পাণ্ডারা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। প্রার্থী ধরার মূল কাজ চালানো সেই পূজা ম্যাডামের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে শিয়ালদহ ও আগে হাওড়া ডিআরএম বিল্ডিংয়ের ভিতরে বহিরাগতদের প্রতারণা চক্র কীভাবে চলতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
উল্লেখ্য, রেলে এর আগেও একাধিকবার নিয়োগের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি প্রতারণার শিকার হন তামিলনাড়ুর ২৮ জন যুবক। চাকরি পেতে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে তাঁদের। বুঝতেও পারেননি কেমন প্রতারকের পাল্লায় পড়েছেন। ঘটনা গত জুন-জুলাইয়ের। নয়াদিল্লির রেল স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ‘পোস্টিং’ হয়েছিল প্রার্থীদের। কাজ ছিল কোন ট্রেন কখন ঢুকছে, কখন বেরচ্ছে। এই চাকরি পেতে ২ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়েছেন একেক জন। জানানো হয়েছিল, টিকিট পরীক্ষক থেকে করণিকের মতো নানা পোস্টে চাকরি পেলেও তাঁদের ১ মাসের প্রশিক্ষণ হিসেবে ওই ট্রেন গোনার কাজ করতেই হবে। এবং তাও দিল্লি গিয়ে। স্বাভাবিক ভাবেই, কারও ধারণাতেই ছিল না কীভাবে প্রতারণার পাশাপাশি হয়রানিও করা হচ্ছে তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.