Advertisement
Advertisement
Job fraud

চাকরির টোপ দিয়ে জালিয়াতির ফাঁদ কলকাতায়, বেকার যুবক-যুবতীদের সতর্ক করল লালবাজার

এক মাসের মধ্যে ফাঁদে পা দিয়ে টাকা খুইয়েছেন অনেকেই।

Fake job portals cheat job seekers in Kolkata। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:April 8, 2021 9:45 am
  • Updated:April 8, 2021 9:45 am  

অর্ণব আইচ: কখনও সিমেন্ট সংস্থা, কখনও বা বিমান সংস্থায়। আবার কখনও বিদেশে চাকরির টোপ। বেসরকারি সংস্থায় মোটা বেতনের চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদ পাতছে জালিয়াতরা। গত এক মাসের মধ্যে বেসরকারি সংস্থায় চাকরির ফাঁদে পা দিয়ে টাকা খুইয়েছেন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। আবার পুলিশের (Kolkata police) তৎপরতায় এক মাসেই বিভিন্ন ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সাতজন। সরকারি দপ্তরে চাকরির নামে প্রতারণা বা জালিয়াতির (Job fraud) ব্যাপারে অনেকটাই সতর্ক হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিশের ধারণা, সেই কারণেই বেসরকারি সংস্থার নামে চাকরির ফাঁদ পাতছে জালিয়াতরা।

কখনও বা বিজ্ঞাপন দিয়ে, আবার কখনও অনলাইনে টোপ দেওয়া হচ্ছে চাকরির। সেই ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা বুঝতেই পারছেন না যে, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। জালিয়াতরাও চাকরির ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে টোপ দিচ্ছে। সেই ভুয়ো ওয়েবসাইট আসল বলে মনে করে জালিয়াতদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। পুলিশের ধারণা, চাকরির আশায় থাকা বহু যুবক ও যুবতী বুঝতে পারছেন না যে, চাকরির কোন ওয়েবসাইটটি আসল, আর কোনটি ভুয়ো।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘সিআরপিএফ ঘেরাও’ মন্তব্যের জের, মমতার বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ বিজেপি]

এই ব্যাপারে লালবাজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাধারণভাবে দেখা গিয়েছে, আসল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করলে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয় না। কিন্তু যারা ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে, তাদের লক্ষ্য থাকে টাকা আদায় করা। সেই কারণে, সিকিউরিটি ডিপোজিট, মেডিক্যাল পরীক্ষা ও আরও বিভিন্ন খাতে জালিয়াতরা টাকা চাইতে শুরু করে। কয়েক লাখ টাকা আদায়ের পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় তারা। লালবাজারের পরামর্শ, কোনও চাকরির ওয়েবসাইট যদি টাকা চাইতে থাকে, চাকরিপ্রার্থীরা যেন একেবারেই টাকা না দেন। তাঁদের সঙ্গে ফোনে কেউ যোগাযোগ করলে যেন এড়িয়ে চলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরেই কলকাতায় ফাঁদ পেতেছে চাকরির জালিয়াতি চক্র। চক্রগুলি আলাদা আলাদা হলেও তাদের ‘মোডাস অপারেন্ডি’ বা জালিয়াতির পদ্ধতি অনেকটা এক। মূলত অনলাইনেই জাল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফাঁদ পাতা হয়। আসলের মতোই দেখতে ওই জাল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বলা হয়, যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন নামী বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পাওয়া যাবে। কখনও সিমেন্ট সংস্থা, কখনও বিমান সংস্থা, আবার কখনও মিনারেল ওয়াটার তৈরির সংস্থায় চাকরির নামে দেওয়া হয় ভুয়ো বিজ্ঞাপন।

[আরও পড়ুন: ‘রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প’, ভোটের পর তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা এড়ালেন না অধীর]

পুলিশ আধিকারিকরা দেখেছেন, চাকরিপ্রার্থীরা যোগাযোগ করার পর তাঁদের ‘ইন্টারভিউ’ নেওয়া হয়। কখনও ফোনে, আবার কখনও বা অনলাইনেই নেওয়া হয় ইন্টারভিউ। এর পরই চাকরিপ্রার্থীদের জানানো হয় যে, তাঁরা চাকরি পেতে পারেন। তার জন্য তাঁদের টাকা দিতে হবে। বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে একটি বিমান সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে ১৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সিমেন্ট সংস্থায় চাকরির নামে ৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আবার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা এক যুবকের কাছ থেকে কয়েক দফায় জালিয়াতরা হাতিয়ে নেয় ২৪ লাখ টাকা। আবার অন্য একটি ঘটনায় জালিয়াতরা হাতিয়ে নিয়েছে দেড় লাখ টাকাও। কোনও ঘটনায় কলকাতা থেকে একসঙ্গে গ্রেফতার হয়েছে চার জালিয়াত। আবার দিল্লি থেকেও এক জালিয়াতকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায়।

প্রত্যেকটি ঘটনায় পুলিশ আধিকারিকরা দেখেছেন, অনলাইনে অথবা হাতে হাতে বেসরকারি সংস্থার ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। সেগুলি নিয়ে চাকরিতে যোগদান অথবা খোঁজখবর নিতে গিয়েই চাকরিপ্রার্থীরা দেখেন যে, সেগুলি জাল। এ ছাড়াও কিছুদিন আগেই একটি জালিয়াতি চক্রের দুই মাথাকে লালবাজারের গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেন। তারা নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। পুলিশ ও অন্য সরকারি দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের যুবকদের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্র। এই ধরনের জালিয়াতি চক্রের থেকে চাকরিপ্রার্থীদের সতর্ক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement