নব্যেন্দু হাজরা: বউবাজারের সুড়ঙ্গে তৃতীয় বিপর্যয় সামাল দিতে ভিন রাজ্য থেকে আনা হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। কেএমআরসিএলের (KMRCL) তরফে জানানো হয়েছে, বেঙ্গালুরু এবং দিল্লি থেকে বিশেষজ্ঞদের একটি টিম আগামী সপ্তাহের গোড়াতেই শহরে আসছে। মাটির চরিত্র পরীক্ষার পাশাপাশি ক্রস প্যাসেজ (Cross Passage) তৈরি করতে তাঁদের নিজস্ব মতামত জানাবেন। কতদিন পর ওই এলাকায় ফের কাজ শুরু করা সম্ভব তাও নির্ধারিত করে দেবে ওই বিশেষজ্ঞ টিম (Expert Team)।
উল্লেখ্য, দুই টানেলের (Tunnel) মাঝে ক্রস প্যাসেজ তৈরি করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটেছে এবার। এক টানেল থেকে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে অন্য টানেলে যাওয়ার জন্যই এই ক্রস প্যাসেজ তৈরি করা হয়। এদিকে বউবাজারে (Bowbazar) মদন দত্ত লেনে সুড়ঙ্গের ভিতর ক্রস প্যাসেজ তৈরির কাজ বন্ধ থাকলেও মাটি শক্ত করতে সুড়ঙ্গের ভিতরে ও উপরে গ্রাউটিং-এর কাজ চলছে। গ্রাউটিং-এর জন্য যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে, তার নাম পলিইউথিরিন। এই রাসায়নিক জল শুষে নিতে সাহায্য করে। পাশপাশি ওই এলাকায় বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে দেখা হচ্ছে নতুন করে আর কোথাও ফাটল ধরছে কি না। যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার চারপাশে ভাইব্রেশন মিটার, সেটলমেন্ট মিটার, টিল্ট মিটার, ক্র্যাক মিটার, ইনক্রোনোমিটার বসানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চলছে নজরদারি। নতুন করে ভূমিক্ষয় আর হয়নি বলেই রবিবার জানিয়েছেন কেএমআরসিএল-এর কর্তারা।
তবে ইঞ্জিনিয়াররা জানাচ্ছেন, মাটির তলায় যে পরিমাণ ওয়াটার পকেট রয়েছে তাতে আবারও সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি করলে জল বেরবে না তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। গোটা বিষয়টি দেখতে তাই দিল্লি ও বেঙ্গালুরু থেকে বিশেষজ্ঞদের টিম আসছে। সেখানকার মেট্রো প্রকল্প তৈরির কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই তাঁরা তাঁদের পরামর্শ দেবেন। তাঁরা সুড়ঙ্গে ক্রস প্যাসেজ তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষিত। পাশাপাশি মাটির উপরের অংশের কী পরিস্থিতি তা দেখতে ঘটনাস্থলে রোজই মাটি পরীক্ষা করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা ছাড়পত্র দিলে তবেই সেই অংশের খোঁড়াখুঁড়ি করবেন ইঞ্জিনিয়াররা।
কেএমআরসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার এ কে নন্দী বলেন, ‘‘নবান্নের বৈঠকে শনিবার যেমন সিদ্ধান্ত হয়েছে, তেমনই ভাবে ভবিষ্যতে কাজ হবে। কোনও জায়গায় কাজ করার আগে পুরসভা এবং পুলিশকে তা জানানো হবে। যদি তারা মনে করে যে সুড়ঙ্গে কাজ হলে মাটির উপরের অংশে সমস্যা হতে পারে, তাহলে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’’ এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ জানতে এদিন থেকেই পুরসভা পুলিশ এবং কেএমআরসিএল-এর আধিকারিকরা একটি ক্যাম্প অফিস করেছেন। সেখানে নিজেদের অসুবিধার কথা জানিয়ে যাচ্ছেন এলাকাবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.