সুচেতা সেনগুপ্ত: রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকদের তাণ্ডবে ভূলুণ্ঠিত বিদ্যাসাগর৷ সমাজের ধারক-বাহকের অবমাননা দেখেছে তিলোত্তমা৷ কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা তদন্তসাপেক্ষ৷ তবে এই ঘটনার পর থেকে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বইপাড়া৷ বুধবার দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের বাইরে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হন পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা অনেকেই৷ সকলের মুখে ধ্বনিত হচ্ছে একটাই শব্দ ‘ছিঃ’৷
শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক অশান্তি নতুন নয়৷ এ ঘটনায় আগেও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কল্লোলিনী৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংঘর্ষে মনীষীদের উপর হস্তক্ষেপ, তা বোধহয় এক্কেবারে নয়া সংযোজন৷ মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা ঘিরে শহরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে৷ অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল ব্যানার, ফেস্টুন সরানো দিয়ে৷ অভিযোগ, গেরুয়া শিবিরের কয়েকজন নির্বাচন কমিশনের গাড়িতেও ভাঙচুর চালায়৷ যদিও তারপর মিছিল করেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ কিন্তু সন্ধেয় বিদ্যাসাগর কলেজের সামনে গিয়ে আবারও অশান্তি৷ ভাঙচুর করা হয় বিদ্যাসাগর কলেজের বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি৷ ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়৷ রাজনৈতিক সংঘর্ষে যেভাবে বিদ্যাসাগরের উপর আক্রমণ শানানো হয়েছে, সেটিকে মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না কেউই৷ নেটদুনিয়া থেকে পাড়ার চায়ের দোকান সর্বত্র কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ধিক্কার৷
এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব শিক্ষামহলেও৷ পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক-অধ্যাপিকা সকলেই প্রতিবাদে শামিল৷ বুধবার সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা৷ কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের বাইরে বসেই আন্দোলন করেন তাঁরা৷ কলেজ স্ট্রিটে প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান বিভিন্ন বয়সের মানুষজন৷ ওই মিছিলে যেমন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, শিক্ষিকারা ছিলেন৷ তেমনই আবার পড়ুয়ারাও তাতে অংশ নেন৷ মিছিলে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের গলাতেই ক্ষোভের সুর৷ আমাদের সমাজ ক্রমশই অবক্ষয়ের পথে হাঁটছে বলেই মত তাঁদের৷ তিলোত্তমায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনার পর লজ্জায় যেন মাথা হেঁট গিয়েছে সকলের৷
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.