অর্ণব আইচ: কলকাতা শহর যে মেয়েদের জন্য রাতে একেবারেই সুরক্ষিত নয়, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা যতই বলুন, মেয়েরা এই শহরে সুরক্ষিত, তা একেবারেই নয়। প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া উষসী সেনগুপ্তের সঙ্গে গত সোমবার রাতে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ফেসবুকে সেই ঘটনার আগাগোড়া বর্ণনা করেছেন তিনি। ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে চারু মার্কেট থানার পুলিশ।
উষসী সেনগুপ্ত প্রাক্তন মিস ইউনিভার্স ইন্ডিয়া। অরিন্দম শীল পরিচালিত ঈগলের চোখ থেকে শুরু করে হিন্দি এবং দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেছেন। উষসী বলেছেন, জে ডাব্লিউ ম্যারিয়ট থেকে ১৭ জুন রাতে তিনি ও তাঁর এক সহকর্মী বাড়ি ফিরছিলেন। কাজের সূত্রেই তাঁদের ফিরতে রাত হয়। এদিনও ব্যতিক্রম ছিল না। হোটেল থেকে উবের নিয়েছিলেন তিনি। এক্সাইড ক্রসিং পেরনোর পর কয়েকজন বাইকারোহী তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রায় জনা পনেরো ছেলে গাড়ির জানলায় আঘাত করতে থাকে।
[ আরও পড়ুন: ফের মেট্রোয় আত্মহত্যার চেষ্টা, ব্যস্ত অফিস টাইমে ব্যাহত পরিষেবা ]
হঠাৎই গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে তারা। চালককে বেধড়ক পেটাতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘটনাটির ভিডিও করতে শুরু করেন উষসী। এরপর তিনি কাছের কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে অভিযাগ জানাতে যান। কিন্তু আশ্চর্য। অন ডিউটির একজন পুলিশ অফিসার তাঁকে সাহায্য করেনি। উলটে তাঁকে জানানো হয়, এলাকাটি ভবানীপুর থানার আওতায় পড়ে। কিন্তু উষসী অনুরোধ করেন। বলেন, তিনি যদি না যান, ওই ছেলেগুলো গাড়িচালককে মেরে ফেলতে পারেন। তখনই যান ওই অফিসার। পুলিশকে দেখে সেখান থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
ঘটনার পর ভবানীপুর থানা থেকে দু’জন পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে আসে। উষসী ও তাঁর সহকর্মী বাড়ির দিকে রওনা দেন। কিন্তু যখন তিনি সহকর্মীর বাড়ি পৌঁছন, তিনটি বাইকে ৬ জন আরোহী তাঁদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে ইট ছুঁড়তে থাকে তারা। উষসীকে গাড়ি থেকে টেনে বের করা হয়। ফোনটি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। ওই মডেল-অভিনেত্রী তখন সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করেন। এবার স্থানীয়রা বেরিয়ে আসে।
[ আরও পড়ুন: রবীন্দ্রভারতীতে ‘বর্ণবিদ্বেষ’ বিতর্ক, অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর ]
সোশ্যাল মিডিয়ায় উষসী লিখেছেন, “স্থানীয়দের দেখে আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। তারপর আমি আমার বাবা এবং বোনকে ডাকি। ঘটনাস্থলের পরের গলিতেই আমার বাড়ি। ইতিমধ্যেই পুলিশ আসে। বলা হয়, চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করতে। আমি সেখানে যাই। উপস্থিত সাব-ইন্সপেক্টর আমায় বলেন, এই অভিযোগ একমাত্র ভবানীপুর থানাতেই হতে পারে। আমি তখন কী করব কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। থানাতেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করি। সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। চিৎকার চেঁচামেচি করে কাজ হয়। তখন রাত দেড়টা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.