সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: রাতের শহরে নিগৃহীত মডেল উষসী সেনগুপ্ত৷ একের পর এক থানায় ঘুরেছেন তিনি৷ তবে কোনও থানাই অভিযোগ নেননি মডেলের৷ প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতেই কড়া পদক্ষেপ নিল লালবাজার৷ জারি করা হল ‘এসওপি’৷ কিন্তু প্রশ্ন হল কী এই ‘এসওপি’৷ নয়া এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, সমস্যায় পড়লে এবার থেকে যেকোনও থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন সাধারণ মানুষ৷ ঘটনাস্থল এবং থানার এলাকা এক নয় বলে এড়িয়ে যেতে পারবেন না আধিকারিকরা৷ পাশাপাশি ‘জিরো এফআইআর’ জারির নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা৷ অর্থাৎ অন্য জেলার যেকোনও ঘটনার ক্ষেত্রেও শহরের যেকোনও থানায় এফআইআর দায়ের করা যাবে৷ ই-মেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই শহরের প্রতিটি থানায় নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রাতের শহরে বাইক বাহিনীর তাণ্ডব রুখতে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে৷ যে বা যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশিকাও জারি করেছে লালবাজার৷
১৭ জুন রাতে উষসী ও তাঁর এক সহকর্মী জে ডব্লিউ ম্যারিয়ট থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। কাজের সূত্রেই তাঁদের ফিরতে রাত হয়। এদিনও ব্যতিক্রম ছিল না। হোটেল থেকে উবের নিয়েছিলেন তাঁরা। এক্সাইড ক্রসিং পেরনোর পর কয়েকজন বাইকারোহী তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রায় জনা পনেরো ছেলে গাড়ির জানলায় আঘাত করতে থাকে। হঠাৎই গাড়ি থামিয়ে চালককে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে তারা। চালককে বেধড়ক মারধর করে৷ সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটির ভিডিও করতে শুরু করেন উষসী। এরপর তিনি কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু কী আশ্চর্য! সেসময় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের কেউই তাঁকে সাহায্য করেনি।
উষসী অভিযোগ করেন, ময়দান থানার পুলিশের কাছে তিনি সাহায্য চাইলে, সেই থানা এলাকার ঘটনা নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়। সেদিন রাতেই ময়দান, ভবানীপুর ও চারু মার্কেট থানায় বারে বারে হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ করেন উষসী। তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখে বুধবার সন্ধেয় বরখাস্ত করা হয় চারু মার্কেট থানার সাব ইনস্পেক্টর পীযুষ কুমার বলকে। পাশাপাশি, শোকজ করা হয় ময়দান থানার সহকারী সাব ইনস্পেক্টর পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ভবানীপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর মেনন মজুমদারকে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় শেখ রাহিত, ফারদিন খান, শেখ সাবির আলি, শেখ গনি, শেখ ইমরান আলি, শেখ ওয়াসিম, আতিফ খান নামে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ধৃতরা প্রায় সকলেই যাদবপুরের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.