Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভেন্টিলেশনে শুয়ে মাধ্যমিক দেবে কলকাতার কিশোর

কিশোরের ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ৷

Even after staying in Ventilation, this Kolkata boy will appear for Madhyamik examination
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 21, 2017 3:28 am
  • Updated:February 21, 2017 3:40 am  

দীপঙ্কর মণ্ডল ও শ্রীষিতা ঘোষ: দুরারোগ্য ব্যাধি৷ কড়া ডোজের ওষুধে আচ্ছন্ন শরীর৷ ছেলেটি এত দুর্বল যে হাসপাতালের বেডে বসতে গেলে মাথা ঘোরে৷ দিবারাত্র অক্সিজেন চলছে তার৷ কিন্তু তাতে কী৷ মন তো অসীম শক্তিশালী৷ সে জানে বুধবার তার জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা৷ কলকাতার এক নামী হাসপাতালে ভর্তি৷ ভেন্টিলেশনে শুয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে শহরের এই কিশোর৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছাত্রটির অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চলাকালীন সে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন করেছে৷ ছাত্রটির ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আধিকারিকরা হাসপাতালেই প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পৌঁছে দেবেন৷

আর পাঁচটা শিশুর মতো বড় হচ্ছিল সে৷ স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলো, খুনসুটি, হইহল্লা সবই ছিল৷ বাবা-মা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তার শরীরে বাসা বাঁধছে এক কঠিন রোগ৷ দশম শ্রেণিতে ওঠার পর শারীরিক অসুবিধা শুরু হয়৷ কিছুদিন আগে যা বাড়াবাড়িতে পৌঁছয়৷ শহরের ওই হাসপাতালের আউটডোরে দেখানো হয়৷ বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানা যায় দুরারোগ্য ব্যাধির কথা৷ এখন বিশিষ্ট এক চিকিৎসকের অধীনে সে ভর্তি৷ সে জানেই না তার কী হয়েছে৷ নির্দিষ্ট দিনেই রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল৷ ঠিক সময়েই স্কুলের তরফে সবার নাম পাঠানো হয়েছিল পর্ষদে৷ কিন্তু বিপত্তি হয় হাসপাতালে আসায়৷ চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন চব্বিশ ঘণ্টাই পর্যবেক্ষণে থাকবে সে৷ বেশিসময় ‘অক্সিজেন মাস্ক’ খুলে রাখা যাবে না৷

Advertisement

(মাধ্যমিকের আগে এই বিষয়গুলিতেই পড়ুয়াদের সতর্ক করলেন পর্ষদ সভাপতি)

কিন্তু অন্য বন্ধুরা সবাই এবার মাধ্যমিক দেবে যে! ছেলেটি প্রথমে তার মাকে জানায় যে কোনও মূল্যে সে পরীক্ষা দেবে৷ দুষ্টুমি করে বলে, আটকে রাখলে সে পালিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে চলে যাবে৷ পরিবারের চিন্তা আরও বাড়ে৷  সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়৷ পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন৷ চিকিৎসক তাঁকে জানিয়ে দেন, হাসপাতালে প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র পাঠিয়ে দিলে তাঁদের আপত্তি নেই৷

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে এই মেগা পরীক্ষায় ৪৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ হয়৷ কলকাতার এই অসুস্থ ছেলেটিও কিছুটা অতিরিক্ত সময় পাবে৷ পর্ষদ সচিব নবনীতা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমরা আগেও হাসপাতালে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নিয়েছি৷ কিন্তু এই ছাত্রটি অন্যরকম৷ এর ইচ্ছাশক্তি সবার কাছে নজির হয়ে থাকবে৷” স্টিফেন্স হকিং অকেজো শরীর নিয়েও বই লেখেন৷ ওই ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর গোটা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত৷ শহরের এই মাধ্যমিক ছাত্রটি হকিংয়ের কথা জানে৷ তবে তাকে বেশি অনুপ্রেরণা দেন হেলেন কেলার৷ দৃষ্টিশক্তি শ্রবণ এবং কথা বলার ক্ষমতা ছিল না হেলেনের৷ ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে তিনি উচ্চশিক্ষায় এগিয়েছিলেন৷ এই কিশোর মনে করে, হেলেনের তুলনায় সে বেশি সক্ষম৷ আর তাই ‘রাইটার’ নিতেও অস্বীকার করেছে সে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement