অর্ণব আইচ: ট্রায়াল অ্যান্ড এরর। একবারে হবে না? তাতে কী? চেষ্টা ছাড়েনি এই ৬ খুদে। ল্যাপটপ আর কম্পিউটারের স্ক্রিনের সামনে বসে টানা চেষ্টার পর দাদা-দিদিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হ্যাকিংয়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে কলকাতারই একটি স্কুলের অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৬ ছাত্র। শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor Stadium) সকাল সাড়ে ন’টা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টানা হ্যাকিংয়ের লড়াই (Ethical hacking) করে গিয়েছে এমন আরও চারশোজনের সঙ্গে, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই কলেজ ছাত্র, না হয়, পেশায় আইটি ইঞ্জিনিয়ার অথবা তরুণ এথিক্যাল হ্যাকার।
এই ৬ জন হচ্ছে অষ্টম শ্রেণির অক্ষয়জ্যোতি বসু, অঙ্কিত সরকার, নবম শ্রেণির যশ সিংহানিয়া, আদৃত দাস, আদিত্য সিংহানিয়া ও শাদমান আলম। এই প্রতিভাবানদের দেখে এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ”ক্লাস এইট আর নাইনেই এত প্রতিভা? এরা কুড়ি পার হওয়ার পর যে কী করে ফেলবে, তা ভাবতেও পারছি না।”
প্রতিযোগিতার শেষে স্কোর নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারও। খুদেদের প্রশংসায় যখন রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের কর্তারা পঞ্চমুখ, তখনও তারা বারবার আয়োজকদের জিজ্ঞাসা করছে, কখন তাদের ছুটি হবে? তাদের তখন বাড়ি ফেরার তাড়া। আসলে কলকাতা পুলিশের আয়োজিত হ্যাকিংয়ের প্রতিযোগিতা ‘হ্যাকাথন’-এ যোগ দেওয়ার জন্য যে ফর্ম ভরতি করতে হয়, সেই ফর্মটি পেতে গেলেও রীতিমতো হ্যাকিংয়ের একটি ধাপ পেরিয়েই যেতে হবে। অনেকের পক্ষেই তা সহজ হয়নি। আদিত্য সিংহানিয়া ও শাদমান আলম জানায়, তারা দু’জন মিলেই চেষ্টা শুরু করেছিল। শতাধিকবার ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ পদ্ধতিতে চেষ্টার পর একসময় ‘ক্র্যাক’ করতে পারে তারা।
যশ সিংহানিয়া ও আদৃত দাস জানায়, তাদেরও বহুবার চেষ্টা করতে হয়েছে। প্রতিযোগিতা শুরুর পরও বড়দের মতো হ্যাকিং গেমের একের পর এক ধাপ ভেঙে অনেকটাই এগিয়ে গিয়ে স্কোর করেছে এই খুদেরা। এই ছাত্রদের দাবি, মোবাইল তাদের বিশেষ পছন্দ নয়। কিন্তু তাদের ধ্যানজ্ঞান কম্পিউটার ও ল্যাপটপ। তাদের অনেকেই জাভা থেকে শুরু করে অনেকগুলি ল্যাঙ্গুয়েজে এখন থেকেই পোক্ত। এই ক্ষেত্রে কম্পিউটারের সিলেবাসও তাদের অনেকটাই সাহায্য করেছে। কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলও তারা পেয়েছে। ভবিষ্যতে তারা প্রত্যেকেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
আদিত্য ও শাদমান জানায়, তারা কম্পিউটারে গেম খেলতেও খুব ভালবাসে। শুটিং গেম তাদের খুব প্রিয়। অষ্টম শ্রেণির অক্ষয়জে্যাতি ও অঙ্কিতের দাবি, কম্পিউটার বিষয়টিই তাদের খুব প্রিয়। তাই তারা এই প্রতিযোগিতায় আসার সুযোগ পেয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.