সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। তারমধ্যে অত্যাবশকীয় পণ্যের সরবরাহ নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে আমজনতা। এমনকী জরুরি পরিষেবা পৌঁছে দিতে যারা বের হচ্ছেন, তাঁদের অনেক সময় সমস্যায় পরতে হচ্ছে।আবার রেশন দোকানে জমায়েত করছেন বহু মানুষ। এবার সেই সমস্যা সমাধান করতে উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বম্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে ১ মাসের চাল-গম একসঙ্গে দিয়ে দেবে সরকার। কিন্তু রেশ দোকানে ভিড় কমান।
বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, জরুরি পরিষেবা ও খাবারের হোম ডেলিভারি আটকানো যাবে না। এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যাঁরা তাঁদের জন্য বিশেষ পাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একটি পাস দেখেই সমস্ত থানা যাতায়াতের অনুমতি দেবে। একইসঙ্গে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে দুটি টাস্ক ফোর্স গঠন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৈরি করেছেন কন্ট্রোল রুমও। জানান, ১০৭০ ও ০৩৩২২১৪-৩৫২৬ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। মিলবে বিভিন্ন সাহায্যও। এমনকী ক্রেতা ও বিক্রেতারা কীভাবে দাঁড়াবেন তাও রীতিমতো গ্রাফিক চার্ট কর বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার রাজ্যে লকডাউনের তৃতীয় দিন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তিনি জানান, সরকারের তরফে দু মাসের সামাজিক পেনশন (বিধবাভাতা, জহর পেনশন, জয় বাংলা প্রকল্প-সহ একাধিক সামাজিক প্রকল্প) একলপ্তে দেওয়া হবে। আগেই আইসিডিএস, মিড ডে মিলের চাল, আলু একইসঙ্গে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী জলের সমস্যা বলে সরকারি প্রাণধারা প্রকল্পের জলও বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। ভবঘুরেদের জন্য নাইট শেল্টারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে অত্যাবশকীয় পণ্য পৌঁছে দিতে বেশকিছু যানবাহন চলাচল করছে। এমনকী, কাজে বের হতে হয়েছে খাবার, ওষুধ-সহ একাধিক হোম ডেলিভারি সংস্থার কর্মীদের। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে তাঁদেরও হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে। এবার তাঁদের জন্য বিশেষ পাসের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার।
এদিকে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়ারও বিশেষ ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি জানান, হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য হাসপাতালের আশপাশের হোটেল, বিয়েবাড়ি ভাড়া নেবে সরকার। এমনকী হাসপাতালে কর্মরত বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের (সাফাইকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী) খাওয়ার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতেও অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সাহা্য্য করবে রাজ্য সরকার।
করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকার একের পর এক আর্খিক প্রকল্প ঘোষণা করছে। অথচ কেন্দ্রের তরফে রাজ্য সরকারকে কোনও আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি স্টেট এমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ড তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেখানে প্রবাসী ভারতীয়, শিল্পপতি-সহ আমজনতা আর্থিক সাহায্য করতে পারবেন। এই জন্য একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেন মুখ্যমন্ত্রী। অ্যাকউন্ট নম্বরটি , A/C 628005501339 এবং IFSC কোডটি হল ICIC0006280। কেউ চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করতে চাইলে সঞ্জন বনশলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে ফোন নম্বরও, 9051022000।
দেশজুড়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন কার্যকর করেোছে কেন্দ্র সরকার। তাই অত্যাবশকীয় পণ্য কেনাকাটি করতে গেলেও বেশকিছু নিয়ম মানতে হবে। দোকানে গেলে ক্রেতা বা বিক্রেতারা কীভাবে দাঁড়াবেন, তাও এঁকে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানা, পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী ৩১ মার্চ লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.