কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ক্রমশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে দেশ। জীবনযাত্রাকে পুরনো ছন্দে ফিরিয়ে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ধীরে ধীরে খুলছে অফিস-আদালত, কলকারখানা। এই নিউ নর্মালে বিশ্লেষণ করে রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তর জানাল, ফের চাহিদা বেড়েছে বিদ্যুতের। গত পাঁচ মাস প্রায় ২২ শতাংশ চাহিদা কমে গিয়েছিল।
চলতি মাস থেকে তা ফের পূর্বের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। করোনা এবং আমফানের ফলে রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় প্রবল বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থা। সেই ক্ষতি দ্রুত মেরামত করে এখন পুরোপুরি প্রস্তুত বিদ্যুৎ দপ্তর বলে দাবি। বাংলার সবথেকে বড় পার্বণ আসন্ন দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে যে বিপুল চাহিদা প্রতি বছর তৈরি হয়, এবারও সেই পরিস্থিতিতে কোনও সমস্যা হবে না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা বহাল থাকবে গোটা পুজোর মরশুমজুড়ে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই সার, কোভিডের থাবায় আটকে ২০ কোটি টাকা, পুরুলিয়ায় থমকে উন্নয়ন]
মঙ্গলবার সল্টলেকের বিদ্যুৎ ভবনে দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2020) প্রস্তুতি ও সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সুরেশ কুমার, ডব্লিউবিএসইডিসিএল-এর (WBSEDCL) সিএমডি শান্তনু বসু ও ডব্লিউবিপিডিসিএল-এর সিএমডি পিভি সেলিম। এর পাশাপাশি বৈঠকে ছিলেন কোল ইন্ডিয়া, এনটিপিসি, আইপিসিএল, সিইএসসি-সহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সংস্থার আধিকারিকেরা। উৎসবের মরশুমে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানের বিষয়টি এই দিনের বৈঠকে সুনিশ্চিত করা হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, “গত বছরের তুলনায় এ বছর পুজোয় বিদ্যুতের চাহিদা খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবদিক বিচার করে দেখা যাচ্ছে, ৮৪১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়তে পারে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে। এবছরও প্রত্যেকবারের মতো কোনও ঘাটতি থাকবে না।” করোনাজনিত পরিস্থিতির কারণে এবার পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছিল, বাড়তি জাঁকজমক না রাখার পরিকল্পনা প্রায় সব পুজো কমিটিরই রয়েছে। তখন স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া হয়েছিল এর ফলে হয়তো বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকবে। তবে শেষমেশ দেখা গিয়েছে, সবমিলিয়ে গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ চাহিদা বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরপর সবদিক খতিয়ে দেখে সর্বমোট চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছে দপ্তর।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে মোট করোনার বলি প্রায় সাড়ে ৪ হাজার, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা-সহ এই পাঁচ জেলা]
এদিন বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। শহরাঞ্চলে ১৬০০ এবং রাজ্যের বাকি প্রান্তে ৬৪০০ মেগাওয়াট ব্যবহৃত হয়েছিল। তারপর লকডাউন আবহে ক্রমে তা হ্রাস পেতে থাকে। যার গড় হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিল থেকে আগস্টের প্রথম দিক পর্যন্ত প্রায় ২২% চাহিদা কম ছিল বিদ্যুতের। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা পূর্বেকার অবস্থানে ফিরে আসছে। এবং পুজোর সময় এই চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.