সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বউবাজার বিপর্যয়ের জেরে ফের মৃত্যু। এবার মারা গেলেন এক বৃদ্ধ। নাম গণেশপ্রসাদ গুপ্ত। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওইদিনই বউবাজারের ঘটনায় মানসিক আঘাত পেয়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছিল। এই নিয়ে বউবাজার বিপর্যয়ের ফলে দু’জনের মৃত্যু হল। কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
১ সেপ্টেম্বর সকালে একের পর এক ভেঙে পড়তে শুরু করে বউবাজারের বাড়ি। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এসে বাড়ি খালি করে দিতে বলে। এক কাপড়ে বেরিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন স্যাকরা পাড়া লেনের বাসিন্দা গণেশপ্রসাদ গুপ্ত। তখনই তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। হাসপাতালের বেডে শুয়েই বউবাজারের ঘটনাগুলি টেলিভিশনে দেখতে থাকেন তিনি। পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার জায়গায় ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। চিন্তায় ও অবসাদে গণেশবাবুরও অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। মঙ্গলবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
ওই দিনই মারা যান অঞ্জলি মল্লিক নামে এক বৃদ্ধি। তিনিও স্যাকরা পাড়ারই বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাড়িটি ছিল বেশ খোলামেলা। ওইরকম পরিবেশই পছন্দ করতেন বৃদ্ধা। কিন্তু বউবাজারে বাড়ি ভেঙে পড়ার পর অন্যদের মতো তাঁকেও স্থানান্তরিত করা হয় হোটেলে। কিন্তু হোটেলের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না তিনি। মঙ্গলবার রাতে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, হোটেলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
মেট্রো এক সপ্তাহ আগে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গের জন্য টানেল বোরিং মেশিনের কাজ চলাকালীন বউবাজারে ভেঙে পড়ে বাড়ি। আতঙ্ক তৈরি হয় মানুষের মধ্যে। তদন্তে নেমে বোঝা যায়, সুড়ঙ্গে জল জমে মাটির আলগা হয়েই বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বউবাজারের দুর্গা পিতুরী লেন, স্যাকরা পাড়া, গৌর দে লেন থেকে বাসিন্দাদের স্থানান্তরিত করা হয় হোটেলে। কিন্তু তাতেও স্বস্তি পাননি বাসিন্দারা। কারণ তাঁদের জিনিসপত্র সবই বউবাজারেই রয়ে গিয়েছে। যদিও কিছু জিনিস মেট্রোকর্মী ও পুলিশের তত্ত্বাবধানে বের করে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও চিন্তা এতটুকু কমেনি। মনে করা হচ্ছে, সেই মানসিক চাপ নিতে পারছেন না বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। সেই কারণেই পরপর দু’জন মারা গেলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.