নব্যেন্দু হাজরা: বউবাজারে আতঙ্ক বিন্দুমাত্র কাটেনি এখনও। তার মধ্যেই ক্ষতিপূরণ প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত ৭৬টি পরিবারকে চিহ্নিত করে কেএমআরসিএল তাঁদের হাতে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য তুলে দেবে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার থেকেই শুরু হবে সাহায্য প্রদানের কাজ। অপরদিকে, বিপর্যস্ত এলাকার আলগা হয়ে যাওয়া মাটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও ৪৮ঘণ্টা
সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার সকাল থেকে ফের বউবাজার এলাকায় সরগরম। ভেঙে পড়া বাড়ি থেকে একেবারে জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল বাসিন্দাদের। সঙ্গে নিতে পারেনি কোনও প্রয়োজনীয় সামগ্রী। ফলে তাঁদের জন্য হোটেলে অস্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা হলেও, অসুবিধা ছিল অনেক। তাঁদের এসব অসুবিধার কথা শুনে সমাধানের চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পরামর্শ দেন, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে,
বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা নিরাপদে বাসিন্দাদের নিজেদের ভেঙে পড়া বাড়িতে নিয়ে যাবেন। সেখান থেকেই তাঁরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়ে আসবেন। তবে এই কাজে বেশি সময় দেওয়া যাবে না। কারণ, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে নতুন করে বিপদের আশঙ্কা থাকেই। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শমতো শুক্রবার বেলার দিকে হোটেল থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙা বাড়িতে যান। সেখান থেকে জিনিসপত্র নিয়ে নেন। সঙ্গে ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী।
দুর্গা পিতুরী লেন, স্যাঁকরা পাড়া-সহ বউবাজারের যে সমস্ত এলাকায় মাটি আলগা হওয়ার ফলে বাড়ি ভেঙে পড়েছে, সেখানকার মাটির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া আরও বেশ খানিকটা সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে সুড়ঙ্গে জল দেওয়ার কাজ চলছে। তবে এখনও জল চুঁইয়ে পড়ছে বলে খবর। রবিবারের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলেই মনে করছেন
বিশেষজ্ঞরা। ফলে এক রবিবারের বিপর্যয়ের রেশ পরের রবিবার পর্যন্তও জারি থাকছে। গত রবিবারই মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে টানেল বোরিং মেশিন চালানোর ফলে বউবাজার এলাকায় ৪টি বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে ফাটল চওড়া হয়ে তা ভেঙে পড়ে। যদিও ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। ঘটনার দায় স্বীকার করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সাহায্য করবে রাজ্য সরকারও। তবে মেট্রোর তরফে অবিলম্বেই যাতে সাহায্য মেলে, তার জন্য চাপ দিতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী।বউবাজার বিপর্যয় মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করে দেওয়া কোর গ্রুপ বৃহস্পতিবার বৈঠক করে। সেখানেই কেএমআরসিএল রাজ্য সরকারের প্রস্তাব মেনে দ্রুত আর্থিক সাহায্য দিতে রাজি হয়েছে। সোমবার থেকেই তাঁরা কাজটি শুরু করতে চান। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করতে পুরসভা ও পুলিশের সাহায্য চেয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মোট ৭৬টি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। সোমবার থেকে
তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণের চেক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.