Advertisement
Advertisement
Jyotipriya Mallick

রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয়র যোগ কীভাবে? অভিযোগের ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন আদালতের

ইডির দাবি, "জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই রেশন বন্টনে দুর্নীতির 'কিংপিন'।

ED Court questions link of Jyotipriya Mallick in ration scam
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:January 3, 2025 8:58 am
  • Updated:January 3, 2025 9:14 am  

অর্ণব আইচ: তদন্ত শুরুর দেড় বছরের মাথায় এবার রেশনে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তুলল আদালত। শুধু তাই নয়, রেশন ডিস্ট্রিবিউটর বা চালকল মালিক চুরি করে থাকলে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কীভাবে সেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হলেন, তা নিয়েও বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়ল রেশন বন্টনে দুর্নীতির তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। শেষপর্যন্ত রীতিমতো উষ্মাপ্রকাশ করে ইডিকে গোড়ায় গিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়ে বৃহস্পতিবার ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, “গঙ্গাসাগর নয়, গঙ্গোত্রীতে গিয়ে তদন্ত করে দেখুন যে, রেশন দুর্নীতির শুরু কোথায়?” জ্যেতিপ্রিয় মল্লিকের জামিনের আবেদনের শুনানিতে এদিন বিচারকের এমনই পর পর প্রশ্নের মুখে ইডির তরফে অবশ্য এদিনও দাবি করা হয় যে, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই রেশন বন্টনে দুর্নীতির ‘কিংপিন’। তাঁর নির্দেশেই গোটা দুর্নীতি চক্র কাজ করেছে। তাঁর নির্দেশেই পুরো দুর্নীতির টাকা পাচার হয়েছে। সবাই একটা ইউনিট হিসাবে কাজ করেছে। সরকারি আধিকারিকরাও এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।” আগামী ৭ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ইডি আদালতে লিখিত রিপোর্ট জমা দেবে।

বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ভারচুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে হাজির করানো হয়। আগে জ্যোতিপ্রিয়র আইনজীবী জামিনের আবেদন করে তাঁর বক্তব্য পেশ করেছিলেন। জামিনের সেই আবেদনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, “চুরির তদন্ত করতে গিয়ে এই দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে।” নদিয়ার যে এফআইআরের ভিত্তিতে ইডি তদন্ত শুরু করেছিল, সেটা একটা চুরির মামলা ছিল বলে স্মরণ করিয়ে দিয়ে ইডির আইনজীবীকে এদিন বিচারক প্রশ্ন করেন, “এই মামলাকে চুরির না বলে দুর্নীতির মামলা বলছেন কেন? আর যদি দুর্নীতিই হয়, তবে যাঁদের সিল উদ্ধার হয়েছিল, সেই সরকারি আধিকারিকদের কাউকে আজ পর্যন্ত অভিযুক্ত অথবা গ্রেপ্তার করেননি? কোনও ব্যক্তি অথবা ডিস্ট্রিবিউটার কি এসে বলেছে যে, গম কম সরবরাহ হয়েছে?” এই অনুষঙ্গেই গত ১৪ মাস ধরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হেফাজতে থাকার প্রসঙ্গ টেনে বিচারকের আরও প্রশ্ন, “ডিস্ট্রিবিউটার বা চালকল মালিক যদি চুরি করেন, তাহলে প্রাক্তন মন্ত্রী কীভাবে এই মামলায় যুক্ত হলেন?

Advertisement

ইডির তরফে দাবি করা হয়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশেই পুরো চেইন বা চক্র কাজ করেছে। তিনিই তখন মাথায় ছিলেন। যাঁরা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন যে, জ্যোতিপ্রিয় মাথায় থাকার জন্য তাঁরা সুরক্ষিত। তাঁদের গায়ে কারও হাত পড়বে না। এই দুর্নীতি নিয়ে অন্তত একশোটি এফআইআর হয়েছে। কিন্তু সরকার সেই তথ্য দেয়নি বলেও ইডির আইনজীবী এদিন দাবি করেন। তখন বিচারক মন্তব্য করেন, “কোথা থেকে কী পরিমাণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয় ও কীভাবে তা বণ্টন করা হয়, সেই তথ্য প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর তরফে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এমনকী, খাদ্যশস্যের গুণগত মান সংক্রান্ত রিপোর্টও জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে।” ইডির অভিযোগের সত্যতা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুলে বিচারক আরও বলেন, “মেনে নিলাম যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কয়েকজন আত্মীয় ও কোম্পানিতে টাকা ঢুকেছে। সেই টাকা না হয় ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের কাছ থেকে এসেছে। কিন্তু তিনি সাধারণভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হতেও পারেন। সেই ক্ষেত্রে এটি অন্য কোনও দুর্নীতির টাকাও হতে পারে।” ইডির তদন্তকারী আধিকারিককে কার্যত কাঠগড়ায় তুলে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, “এই টাকা যে রেশন দুর্নীতিরই, তা কীভাবে পেলেন? এই ভাবনা কোথা থেকে এল?”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement