সুব্রত বিশ্বাস: কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতি কাটিয়ে স্বাভাবিকের দিকে যখন দেশ এগোচ্ছে, তখনও কোভিডের মোক্ষম সময়ে রেলের জারি করা নিয়মবিধি এখনও চালু রয়েছে। এখনও সংরক্ষিত টিকিট কাটার সময় যাত্রীকে গন্তব্যের ঠিকানা দিতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে পিন কোড নম্বরও। কোভিডে জারি করা এই নির্দেশ এখনও থাকায় চরম বিপদের মুখে পড়েছেন যাত্রীরা। এমনকী রিজার্ভেশন ক্লার্করাও নিত্যদিন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছেন যাত্রীদের সঙ্গে।
এই কারণে উভয়পক্ষের যেমন হয়রানি হচ্ছেন, তেমনই কাউন্টারের সামনে বিরাট লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। রিজার্ভেশন (Reservation) বিভাগ সূত্রে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, শুধু ঝামেলাই নয়। একটা টিকিট কাটার জন্য খুব বেশি হলে দু’মিনিট লাগে। কিন্তু বিধিনিষেধের কারণে সেই টিকিট কাটতে লাগছে দীর্ঘ সময়। ফলে যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে পড়ছে। বুধবার হাওড়া (Howrah) স্টেশনের সামনে এমনই সমস্যার মধ্যে পড়ে টিকিট করতে পারেননি কোন্নগরের বাসিন্দা অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ”উত্তরবঙ্গে এক আত্মীয় অসুস্থ। তাঁকে দেখতে যাব। গ্রামে বাড়ি হওয়ায় ঠিকানা অজানা। ফলে টিকিটও কাটতে পারছি না।” এই সমস্যা শুধু অশোকবাবুর নয়, আশি শতাংশ যাত্রীই সমস্যার সামনে পড়ছেন গন্তব্যের ঠিকানা না জানা থাকায়।
পূর্ব রেলের (Eastern Railway) মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, রেল বোর্ডের নির্দেশে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সিস্টেমে ঢোকানো রয়েছে বাধ্যতামূলকভাবেই। নির্দেশ বাতিল করার দায়িত্ব বোর্ডই। ফলে সমস্যা সামাধানের রাস্তা নির্ধারিত কোনও জোন থেকে সম্ভব নয়। সেন্ট্রাল রেলের কমার্শিয়ালের সর্বোচ্চ পদকর্তা রেল বোর্ডের কাছে রীতিমতো আবেদন জানিয়ে এই গন্তব্যের ঠিকানা বাতিলের আবেদন করেছে। কোভিডের দাপটে যখন বিধ্বস্ত দুনিয়া ঠিক তখন ট্রেনে যাত্রা করা ব্যক্তিরা কোথায় যাচ্ছেন, কী পরিস্থিতিতে যাত্রা করলেন – সেসব রেকর্ডের জন্য গন্তব্যের ঠিকানা দেওয়াটা টিকিট কাটার সময়ে ফর্মে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তা এখনও স্থায়ীভাবে রয়ে গিয়েছে।
সিপিআরও একলব্যবাবুর বক্তব্য, ”একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ ঠিকানা না দিলেও চলবে। তবে সেখানকার একটা পিন কোড জেনে নিয়ে দিলেই তা কার্যকর হবে।”রেলের রিজর্ভেশন বিভাগ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বহু সাধারণ মানুষ আসেন টিকিট কাটতে, যারা লিখতে পড়তে পারেন না। তারা গন্তব্যের ঠিকানা, পিন কোড সংগ্রহ করে আসবেন, এটা ভাবাটাই খুব কঠিন। তবে এখন সবাই বোর্ডের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.