ফাইল ফটো
সুব্রত বিশ্বাস: করোনা মোকাবিলায় কর্মীদের ‘সুরক্ষা-কবচ’ পৌঁছে দিতে ব্যর্থ রেল। বিশ্বজুড়ে যে করোনা যুদ্ধ চলছে তাতে রেলের ভূমিকাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে দিল পূর্ব রেলের কর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন। সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, এই যুদ্ধে রেলের যে সেনানীরা কাজ করছেন তাঁদের অবস্থা ‘ঢাল তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারের মতো।’
পূর্ব রেলের হাসপাতালগুলিতে ৫৩৫টা আইসোলেশন বেড তৈরির নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড। লিলুয়া রেল হাসপাতালে ৯৬টি বেডের নির্দেশ দিলেও পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটার নেই, প্রশিক্ষিত নার্স নেই, টেকনিশিয়ান নেই, পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই, ওটি অপারেটর নেই, আইসোলেশন সেটআপ নেই। প্রায় একই অবস্থা বি আর সিং, হাওড়া অর্থোপেডিকে। মালদহ, জামালপুরে তো কোনও ব্যবস্থাই নেই বলে অভিযোগ ইউনিয়নের। রেলের কোনও হাসপাতালে টেস্টের ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থায় করোনা আক্রান্ত কোনও রোগী রেলের হাসপাতালে রাখলে মৃত্যু অনিবার্য বলে জানিয়ে দিলেন মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ। ইউনিয়নের এই অভিযোগ মেনে বি আর সিং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্দেহজনক হলে আমরা আইডিতে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
এর পাশাপাশি রেলের হাসপাতালগুলিতে এম ৯৫ মাস্ক, সার্জিক্যাল ও প্যাথোলজিক্যাল সামগ্রী থেকে স্যানিটাইজার ও গ্লাভসের সাপ্লাই নেই বলে অভিযোগ। কর্মী ইউনিয়নগুলির ক্ষোভ, দেশে এই মুহূর্তে তিন হাজার মালগাড়িতে পণ্য পরিবহণ হচ্ছে। এছাড়া যে সব পণ্য মালগাড়িতে যাবে না সেজন্য পার্সেল ভ্যান চালানো শুরু করছে রেল। এই প্রক্রিয়া জারি রাখতে যে সব কর্মীরা ফ্রন্টলাইনে কাজ করছেন, তাঁদের সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ নেই রেলের।
পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষের অভিযোগ, রেল বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাচ্ছে, এই জোগান দিচ্ছি, তাই জোগান দিচ্ছি। এসব ‘আইওয়াশ’ বলে জানিয়ে তিনি বলেন, কর্মী ইউনিয়নই এখন কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফান্ড থেকে চার লক্ষ টাকার করোনা মোকাবিলার সামগ্রী কিনে ইউনিয়নের ৪০টি শাখা থেকে একেবারে ফ্রন্টলাইন কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞান মঞ্চের সাহায্য নেওয়া হয়েছে এক্ষেত্রে। পাশাপাশি ঠিকা শ্রমিকদেরও থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করেছে ইউনিয়ন।
হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন-সহ শহরতলির স্টেশনে থাকা ভবঘুরে, হতদরিদ্র শ্রমিকদের দু’বেলা খাবার দিচ্ছে রেল। হাওড়ার সিনিয়র ডিসিএম রাজীব রঞ্জন বলেন, আইআরসিটিসি(IRCTC)-র তত্ত্বাবধানে এই খাবার তৈরি হচ্ছে। RPF জওয়ানরা এই খাবার সরাসরি দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করছে। আর এই খাদ্য বণ্টনের সময় সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.