নব্যেন্দু হাজরা: একাধিকবার উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়েছে। কিন্তু বারবারই নানা কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। কখনও চূড়ান্ত ছাড়পত্র এসে পৌঁছয়নি। কখনও আবার ট্রায়াল রানের সময় সামান্য যান্ত্রিক ত্রুটিতে দিন পিছোতে হয়েছে। আবার কখনও উদ্বোধকের সময় হয়নি। তবে এবার আর তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৭ নভেম্বর যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পথ চলা শুরু করবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনকেই কেএমআরসিএলের তরফে উদ্বোধনে হাজির থাকার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে কেএমআরসিএলের এক আধিকারিকের কথায়, “এতবার উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক হয়েও তা পিছিয়ে গিয়েছে, তাই আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে কিছু না বলাই ভাল।”
আগামী মাসের ৭ তারিখ বৃহস্পতিবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম ফেজের পরিষেবা শুরু হতে পারে। মেট্রো চলবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত। প্রথম ফেজে মেট্রোর দুটি ট্রেনের মধ্যে ব্যবধান থাকবে কুড়ি মিনিট। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে যুবভারতী স্টেডিয়াম পর্যন্ত যেতে লাগবে ১৬ মিনিট। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াবে কুড়ি সেকেন্ড। ঠিক হয়েছে প্রান্তিক স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল সাতটায়। আর শেষ ট্রেন রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। সর্বনিম্ন ভাড়া করা হতে পারে ১০ টাকা।
যাত্রী নিয়ে ছোটার আগে সময় মেনে মহড়া চলেছে তিনদিন। সেখানে আধিকারিকরাই যাত্রী হয়ে টোকেন পাঞ্চ করে ট্রেনে উঠেছেন। আবার প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়েছেন। কিন্তু তাতে কিছু সমস্যা হয়েছিল। ট্রেন এসে দাঁড়ালেও সময়মতো স্ক্রিনডোর খুলছিল না। সেই সমস্যা মিটেছে। চূড়ান্ত ছাড়পত্র এসে যাবে নভেম্বরের গোড়াতেই।
মেট্রো সূত্রে খবর, দেড় মিনিট অন্তর চালকহীন রেক চালানো গেলেও আপাতত কুড়ি মিনিট অন্তর তা চালানো হবে। যাত্রী সংখ্যা দেখে ভবিষ্যতে ঠিক হবে কতক্ষণ অন্তর চলবে মেট্রো। এক আধিকারিক জানান, আসলে যেটুকু অংশে ট্রেন চলাচল শুরু করবে, ওই রুটে কতজন মেট্রোয় উঠবেন, তা নিয়ে যথেষ্টই সংশয়ে তাঁরা। শিয়ালদহ পর্যন্ত পরিষেবা চালুর আগে খুব যে মেট্রোয় ভিড় হবে তা মনে করছেন না অনেকেই। তাই দুই ট্রেনের ব্যবধান রাখা হচ্ছে ২০ মিনিট। রবিবার তা আরও বাড়বে। অন্যদিকে মেট্রো প্ল্যাটফর্মে যাত্রী তোলার জন্য দাঁড়াবে ২০ সেকেন্ড। ট্রেন এলে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর খুলবে। আবার চলে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে।
সূত্রের খবর, গোটা পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করবে সেন্ট্রাল সার্ভার। সেখান থেকেই প্রতি ট্রেনের যাবতীয় অপারেশন হবে। সেই অনুযায়ী হয়েছে কর্মীদের প্রশিক্ষণও। কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, নয়া এই পরিষেবা শুরু হবে কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে। যার ফলে দু’টি ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব কম থাকবে। চালকরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন। ফলে ট্রেন লেট কম হবে। কিন্তু এখনই এসব প্রয়োজন হবে না। নতুন এই মেট্রোর প্রত্যেক কামরায় থাকছে সিসিটিভি। প্রতিবন্ধীদের ট্রেনে ওঠার জন্য থাকছে হুইল চেয়ার। থাকবে পুশ অ্যান্ড টক সিস্টেম। ফলে ট্রেনের কামরায় কোনও ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা এই মাধ্যম ব্যবহার করে চালককে সজাগ করতে পারবেন। অত্যাধুনিক এই রেকে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য দরজার সাইজ বর্তমান মেট্রোর তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। দাঁড়ানোর জন্যও অনেকটা জায়গা থাকছে নতুন রেকে। এক কর্তার কথায়, আগামী মাসের গোড়াতেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে নয়া পরিষেবা চালুর জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.