দিপালী সেন: বাগুইআটিতে দাদার বাড়িতে আত্মঘাতী দুর্গাপুজোর থিমশিল্পী বন্দন রাহা। মঙ্গলবার সকালে বাগুইআটির জগৎপুরের বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ৫৪ বছর বয়সি শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাহত তাঁর পরিবার তথা শিল্পীমহল।
২০০১ সালের পুজোয় কসবায় ভাঁড়ের মণ্ডপ তৈরি করে পুজোপ্রেমীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বন্দন রাহা। আজ বাংলার দুর্গাপুজো ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু এখনকার মতো সেই সময় শহরের দুর্গাপুজোয় সেভাবে থিমের রমরমা ছিল না। তাই ভাঁড়ের প্যান্ডেল বানিয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছর ধরে সেভাবে কাজ পাচ্ছিলেন না। যে কারণে অবসাদে ভুগছিলেন বলেই খবর।
শিল্পীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, পিকনিক গার্ডেনে তাঁর বাড়ি হলেও স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে দাদার সঙ্গে বাগুইআটিতেই থাকতেন। শারীরিক ভাবে অসুস্থও ছিলেন। অ্যালজাইমার রোগেও আক্রান্ত ছিলেন বলে দাবি পরিবারের। তাছাড়া হাতে কাজও ছিল না। গতবারের দুর্গাপুজোয় কলেজস্ট্রিটে একটি থিমের মণ্ডপ তৈরির কাজ পেয়েছিলেন। তবে সেখানেও একাধিক কারণে টাকা-পয়সা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সবমিলিয়ে অবসাদ গ্রাস করেছিল তাঁকে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অবসাদ থেকেই আত্মহননের পথ হয়তো বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
তবে শিল্পী বেঁচে থাকবেন নিজের কাজের মধ্যে দিয়ে। ভাঁড়ের মণ্ডপ তৈরির পরই গোটা বাংলা তথা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল বন্দন রাহার নাম। গৌরাঙ্গ কুইলার মতো থিমশিল্পীও খ্যাতি পেয়েছেন তাঁর হাত ধরেই। সম্প্রতি ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের তরফে তাঁকে জীবনকৃতি সম্মানও দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে আর্থিক ভাবে সাহায্যের উদ্যোগও নিয়েছিলেন অন্য থিমশিল্পীরা। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই শেষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.