বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব - দুর্গাপুজো।
অর্ণব আইচ ও নিরুফা খাতুন: ইউনেস্কোর (UNESCO) মান্যতা পেয়েছে কলকাতার পুজো। তার উপর চলছে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। তাই এবার পুজোর কলকাতায় আরও বেশি সংখ্যক বিদেশি আসবেন। তাঁদের ও অন্য দর্শনার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কারণেই বড় পুজো মণ্ডপগুলিতে কত ভিড়, তা জানিয়ে দেওয়া হবে ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে। আলিপুরে ধনধান্য অডিটরিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে কলকাতা পুলিশের সমন্বয় বৈঠকে পুজো উদ্যোক্তাদের জানালেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।
এদিন সমন্বয় বৈঠকে কলকাতা পুলিশের কর্তা, থানা, ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দমকল, সিইএসসি, কলকাতা পুরসভা, কেএমডিএ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারাও। বৈঠকে কয়েকজন পুজো উদ্যোক্তা নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এই বছর কলকাতা পুলিশের নতুন উদ্যোগ ‘পুজো কিউ সিস্টেম’। এতে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুজো দর্শনার্থীদের সংখ্যা গুনে মণ্ডপের বাইরে ও রাস্তায় বিশেষ ডিসপ্লে বোর্ডে জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন কোন মণ্ডপের সামনে কত মানুষের ভিড় রয়েছে। এতে কোনও মণ্ডপে বেশি ভিড় থাকলে ওই দর্শনার্থীরা ভিড়ে এড়িয়ে অন্য মণ্ডপে গিয়ে ঠাকুর দেখতে পারবেন। যদিও এই বোর্ড লাগানোয় আপত্তি তোলেন কয়েকজন পুজো (Durga Puja News) উদ্যোক্তা। তাঁদের দাবি, এভাবে ভিড় গোনা শুরু হলে মণ্ডপে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে যাবে।
এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার জানান, কলকাতায় দুর্গাপুজোর খ্যাতি পৌঁছে গিয়েছে সারা বিশ্বে। ইউনেস্কো পুজোকে বিশেষ মান্যতা দিয়েছে। বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে। শহরে আসবেন অনেক বিদেশি অতিথি। অন্য রাজ্যের বহু বাসিন্দা কলকাতার পুজো দেখতে চাইছেন। অনেক ভিআইপিও পুজোয় আসবেন। পুজোর দিনগুলিতে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে শহরে। পুজোর দিনগুলিতে যাতে সবাই আনন্দে কাটাতে পারেন, তার জন্য কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাতে কোনও দর্শনার্থীর সামান্য অসুবিধা না হয়, তার জন্য এই ‘পুজো কিউ সিস্টেম’-এর উদ্যোগ পুলিশের। এতে আরও বেশি দর্শনার্থী সুষ্ঠুভাবে মণ্ডপ দর্শন করতে পারবেন। কিছু মণ্ডপে থাকছে এই ব্যবস্থা। এতে পুজো কমিটি ও পুলিশের সুনাম বাড়বে। বরাবরই নতুন উদ্যোগ পুলিশ নিয়েছে। যেগুলি ভাল, সেগুলি বারবার প্রয়োগ করা হয়।
কয়েকজন পুজো উদ্যোক্তা অভিযোগ জানান, পুজোয় বেশি রাতে বাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্য ও তার ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ে। এই ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার জানান, রাত দু’টোর পর বাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্য রুখতে ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা থানার আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন। পুজোয় শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা মসৃণ ও ‘ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট’ যাতে ভালো থাকে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবারও পুলিশ প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। সেখানে বিশেষ গুরুত্ব পাবে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’। কারণ, শহরে দুর্ঘটনার সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমেছে। কলকাতা নিরাপদতম শহর।
কোনও সমস্যা হলে ‘বন্ধু অ্যাপ’-এ আপদকালীন ব্যবস্থার সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশ কমিশনার। মণ্ডপের কাছে খারাপ রাস্তা সারানোর দাবি তোলে কলেজ স্কোয়ার। মহম্মদ আলি পার্ক জলাধার সরানোর ব্যাপারে পুরসভাকে জানায়। সুরুচি সংঘের দাবি, যেন লক গেট ব্রিজ এবার ব্যবহার করা যায়। হিন্দুস্থান পার্কের দাবি, পুরনো ও নতুন পুজোর মধে্য হোর্ডিং লাগানোর জায়গা নিয়ে মনোমালিন্য মেটাতে হবে। এই বছর দশমী থেকে লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত বিসর্জন। ওই দিনই রেড রোডে কার্নিভাল। বিসর্জনের সুবিধার জন্য পুজো উদ্যোক্তারা পুলিশকে গঙ্গার জোয়ার-ভাটার সময় জানানোর দাবি তোলেন। দুর্ঘটনা এড়াতে পুজোর আগে বিদ্যুৎ কর্মীদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.