শুভময় মণ্ডল: পাঁজি মতে, আর দু’মাস বাদেই মহাষষ্ঠী। দেবী দুর্গার বোধনের দিন। কিন্তু করোনার কাঁটায় দুর্গাপুজোর (Durga Puja) আনন্দটাই ফিকে হয়ে গিয়েছে। ভাদ্রের শুরুতে যে একটা পুজো পুজো ভাব চলে আসে আকাশ-বাতাসে, তা যেন এবার শুষে নিয়েছে করোনা। করোনা আর কর্মনাশা লকডাউনের (Lock Down) মারে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এই অবস্থায় উৎসবের মানসিকতাই চলে গিয়েছে অনেকের। কিন্তু পুজো হবেই, বিশ্বাসী উদ্যোক্তারা। তবে মানবসেবাও হবে। এই মন্ত্রকে পাথেয় করে অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরের এক পুজো কমিটি। খুঁটিপুজোর দিনই মানবসেবা করে এবছরের পুজোর প্রস্তুতির সূচনা করবে দমদম তরুণ দল। লকডাউনের কর্মহীন মানুষদের হাতে অর্থ সাহায্য তুলে দিয়ে মানবসেবায় ব্রতী হবেন উদ্যোক্তারা।
সেই মার্চ মাস থেকেই করোনাতঙ্কে বন্ধ শহর ও শহরতলি সংযোগকারী লোকাল ট্রেন (Local Train)। কিন্তু এই লোকাল ট্রেনই বহু মানুষের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম ছিল। বহু হকার শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখায় দৈনন্দিন ফেরি করতেন। কিন্তু করোনার জেরে লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়া আজ পাঁচ-ছ’মাস তাঁরা কর্মহীন। খুবই কষ্টের মধ্যে আছেন। আবার ময়দান বন্ধ থাকার ফলে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল মাঠে লজেন্স ফেরি করা মহিলা, ঘুগনি বিক্রি করা হকারেরও আজ কাজ নেই। এবার অরকম বহু মানুষের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এল দমদম তরুণ দল। ঠিক হয়েছে, রবিবার খুঁটিপুজোর অনুষ্ঠান ছোট করে হবে। তারপর খুঁটিপুজোর খরচ বাঁচিয়ে এবার বিরাটি, দমদম এবং বিধাননগর স্টেশনের কিছু হকার, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল মাঠে লজেন্স ও ঘুগনি বিক্রি করেন যে ফেরিওয়ালারা, তাঁদের হাতে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা করে তুলে দেবেন উদ্যোক্তারা।
তরুণ দলের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ প্রসাদ জানিয়েছেন, “প্রতিবছরই খুঁটিপুজো বেশ করেই হয়। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। করোনার জেরে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। পুজোর আনন্দটাই তাঁদের কাছে ফিকে হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মুখে একটু হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছি আমরা। যৎসামান্য সাহায্য হকরা-ফেরিওয়ালাদের করা হচ্ছে। আড়ম্বর কমিয়ে খুঁটিপুজোর টাকা বাঁচিয়ে সেই দিয়ে মানবসেবা করা হবে।” এইভাবে সব পুজো কমিটিগুলি যদি এগিয়ে আসেন দুস্থদের সাহায্যের জন্য তবে কর্মহীন মানুষগুলিরও মুখে হাসি ফুটবে, বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.