স্টাফ রিপোর্টার: রেড রোডের কার্নিভ্যালে মুগ্ধ ইউনেস্কো। দুর্গাপুজোর এহেন বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক উদযাপন নিয়ে রিপোর্ট যাচ্ছে জেনিভায়।
কলকাতা শহর ও শহরতলির সেরা ৯৬টি পুজো অংশ নিয়েছে কার্নিভ্যালে। অসাধারণ সব ট্যাবলোর শোভাযাত্রা। হরেক ঘরানার নাচ-গান, হস্তশিল্পের প্রদর্শন, সামাজিক বার্তা, পরিবেশ বাঁচানোর অঙ্গীকার। থিমের মোড়কে জাতি-ধর্ম ভুলে উৎসবের উদযাপন। ঢাকের বোল, উলু-শঙ্খধ্বনি, ধুনুচি নাচ। রেড রোডের রানওয়ে জুড়ে থিমের কুচকাওয়াজ! আট থেকে আশি, সবার মন কেড়ে নিয়েছে দুর্গাপুজোর কার্নিভ্যাল। মুগ্ধ রেড রোডে মজুত ইউনেসকোর প্রতিনিধিদল। মুগ্ধ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও অভ্যাগতরা। বিভিন্ন দেশের প্রায় একশোজন প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।
মূল মঞ্চের মাঝে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঁদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, ডিজি মনোজ মালব্য, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। ডানদিকে ছিলেন প্রসেনজিৎ-দেব, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-সহ টলিউডের এক ঝাঁক তারকা। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের কয়েকজন সদস্যও। বউদি লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা ও কন্যা আজানিয়া।
মহালয়া থেকেই ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা শহরজুড়ে পুজো পরিক্রমা করেছেন। এবার উৎসবের শেষ প্রহরের সাক্ষীও থাকলেন তাঁরা। কার্নিভ্যালের জৌলুস দেখে চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছে তাঁদের। বোধন থেকে বিসর্জন, শারদ উৎসবের রঙিন উদযাপনের অভিজ্ঞতাই প্রাথমিক রিপোর্টের আকারে যাচ্ছে ইউনেস্কোর সদর দপ্তর জেনিভায়। চূড়ান্ত রিপোর্ট পাঠানো হবে পরে।
শুক্রবার বিকেলে নির্ধারিত সময়ের (বিকেল চারটে) একটু আগেই শুরু হয় কার্নিভ্যাল। তার আগে রেড রোড ধরে পায়ে হেঁটে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে করতে মঞ্চে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। পায়ের চোটের কারণে দীর্ঘদিন বাড়ি থেকেই কাজ করছেন তিনি। অবশেষে সরকারি অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকলেন। মূল মঞ্চটিকে জমিদারবাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছিল। উলটোদিকে মঞ্চে বিদেশি অতিথিরা ছিলেন।
রামমোহন সম্মিলনীর ‘সাগরকন্যা’ থিম দেখে মুগ্ধ হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি শিল্পীদের থেকে নৌকার হাল চেয়ে নিয়ে মঞ্চ থেকেই তালে তালে পা মেলান। মঞ্চে উপস্থিত শিল্পীরাও ‘দে দোল দোল দোল’-এর ভাটিয়ালি সুরে ভেসে যান। শোভাযাত্রার সঙ্গে পা মেলান পুজো কমিটির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ সৌগত রায়, শিল্পী শুভাপ্রসন্ন, বিধায়ক শিউলি সাহা, কাউন্সিলর অয়ন চক্রবর্তী প্রমুখ। নিজের গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাবের পুজোয় দুর্গা স্তোত্রের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
কার্নিভ্যালে থাকলেও মঞ্চে বসেই মুখ্যমন্ত্রী বারবার খবর নেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। অসুস্থ মন্ত্রীকে যাতে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চেই মুখ্যসচিব ও কলকাতা পুলিশের নগরপালকে ডেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। বেশ কয়েক দফায় আলাদা করে ডেকে কথা বলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.