দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনার থাবায় চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়তে চলেছে রাজ্যের ব্লাড ব্যাংক সংস্থা সহ হাসপাতালগুলি। করোনা রুখতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে জমায়েতে। তবে জমায়েত এড়ালে রক্তদান শিবির আয়োজন করা হবে কী উপায়ে? ফলে শীঘ্রই হাসপাতালগুলিতে রক্তের চাহিদা মেটাতে গিয়ে দিশেহারা অবস্থার সম্মুখীন হতে পারে ব্লাড ব্যাংকগুলি।
শাঁখের করাতের মধ্যে পড়ে চূড়ান্ত রক্ত সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। একদিকে রাজ্যে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জেরে জমায়েত মাইকিং করা বারণ, ফলে আয়োজন করা যাচ্ছে না রক্তদান শিবির । অন্যদিকে করোনার থাবায় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির ভাঁড়ার ধুধু হতে চলেছে। এমতাবস্থায় প্রমাদ গুনছেন রোগী ও তাঁর বাড়ির লোকেরা। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়মিত রক্ত দিতে হয়। ক্যানসার, হিমোফিলিয়া, পুড়ে যাওয়া বা বড় দুর্ঘটনায় জখমদের হামেশাই রক্ত লাগে। এছাড়া প্রসূতি ও বড় অপারেশন হয়েছে এমন রোগীদের জন্য সবসময় রক্ত মজুত রাখা জরুরি।এত চাহিদা পূরণে প্রধান ভরসা রক্তদান শিবির, যেখানে স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার মজবুত করে তোলেন দাতারা। কিন্তু গত মাসে শুরু হওয়া মাধ্যমিক ও চলতি উচ্চমাধ্যমিকের কারণে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা হাতেগোনা। এসবের মাঝে মারন করোনার জেরে। জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ক্লাব এবং এনজিওগুলি এই পরিবেশে করার ভাবনা বন্ধ রেখেছে। উল্টে আগে থেকে স্থির করে রাখা নির্ধারিত শিবিরগুলিও বাতিল হচ্ছে। মঙ্গলবার সোনারপুর থানা ও সংলগ্ন এলাকায় রক্তদান শিবির বাতিল হয়েছে। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় রক্তদান আন্দোলনের অন্যতম মুখ অচিন্তকুমার লাহা এ প্রসঙ্গে বলেন,”উদ্যোক্তারা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রক্তদান শিবির আয়োজন করেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য এই সময় শিবিরের সংখ্যা তাই কম থাকে। তার উপর করোনার কারনে জমায়েত বন্ধ। একের পর এক শিবির বাতিল হচ্ছে। এই সঙ্কট কাটাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
এই প্রসঙ্গে আরবিটিসি—র অধিকর্তা ডা. ব্রততী দে বলেন,”আমাদের এই মুহূর্তে রক্তের সঙ্কট নেই। যে পরিমান রক্ত আছে তাতে আগামী এক সপ্তাহ কোনও অসুবিধা হবে না। যে আশঙ্কা আছে, তা আমরা কাটিয়ে উঠব। স্বাস্থ্য ভবন নিশ্চই কোনও পদক্ষেপ করবে। ” হৃদরোগ, এইচআইভি, যক্ষ্মা, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ইত্যাদি পরীক্ষার পর স্বেচ্ছায় রক্তদানে অংশ নেওয়া যায়। রক্তদান আন্দোলনের কর্মীদের একটি অংশ দুঃশ্চিন্তা মুক্ত নয়। তাঁদের বক্তব্য, বিশেষ পরীক্ষা ছাড়া শরীরে করোনা ভাইরাস আছে কি না জানা যায় না। শিবির ছাড়াও ‘ইন হাউস ক্যাম্প’—এ সংগ্রহ করা রক্ত সন্দেহ মুক্ত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.