সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা দুটো নয়। একসঙ্গে ৩৫টি ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন (এফডিসি)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দিলেন ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। সংস্থার অধিকর্তা রাজীব সিং রঘুবংশী স্বাক্ষরিত আদেশনামা সব রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে পাঠানো হয়েছে তীক্ষ্ম নজরদারি চালাতে।
এখন প্রশ্ন ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া কেন এমন পদক্ষেপ নিল? কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ামক সংস্থার সাফ কথা বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে একটি অসুখের চিকিৎসায় ‘আরও ভালো’ ফল পেতে একটির বদলে দুই বা ততোধিক ওষুধের নির্দিষ্ট ডোজ মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অনেক ক্ষেত্রেই কম্বিনেশনগুলো ওষুধবিজ্ঞানের নিয়ম মেনে তৈরি হয় না। ফলে তার নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে। অথবা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে। রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে। যা কোনও অবস্থায় কাঙ্খিত নয়। এর ফলে ওই কম্বিনেশনগুলি আর উৎপাদন, রপ্তানি, বণ্টন ও বিক্রি করা যাবে না আগামী দিনে।
কাশির চিকিৎসায় দেদার ব্যবহৃত হয় ফিনাইল–এফ্রিনের সঙ্গি ডেক্সট্রোমিথর্ফিন কিংবা ডাইফেনহাইড্রামিন কম্বিনেশন। ডায়াবিটিসের চিকিৎসায় জনপ্রিয় কম্বিনেশন হল মেটফর্মিন প্লাস ডাপাগ্লিফ্লোজিন কিংবা গ্লিমেপিরাইড। কোলেস্টেরলের চিকিৎসায় আবার হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত ওষুধ হল রোসুভাস্ট্যাটিন প্লাস ক্লোপিডোগ্রিল প্লাস অ্যাসপিরিন কম্বিনেশন। পেট খারাপ হলে তো সাধারণ মানুষও দেদার ওষুধের দোকান থেকে কিনে খায় নরফ্লক্সাসিন প্লাস মেট্রোনিডাজোল কিংবা ওফ্লক্সাসিন প্লাস অর্নিডাজোল কম্বিনেশন। উচ্চাঙ্গের অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবেও মেরোপেনেম প্লাস অ্যাভিব্যাকটাম কম্বিনেশন ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা। এ রকমই রয়েছে আরও খান ত্রিশেক কম্বিনেশন, যেগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ডিসিজিআই সব রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলকে নির্দেশ দিয়েছে, আগামীদিনে এই সব কম্বিনেশনের ওষুধ নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলে তা পত্রপাঠ খারিজ করতে হবে। এমনকী, আপত্তিকর এই সব কম্বিনেশনের যে সব ব্র্যান্ড এখন বাজারে চলে, সেগুলিকেও বাজার থেকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি যাতে তুলে নেয়, সেই মর্মেও পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজির বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই সব কম্বিনেশন ওষুধগুলি কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অভাব রয়েছে। তাই রোগীস্বার্থে এই কম্বিনেশনগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় ভালোই হয়েছে। এক চিকিৎসক বলেছেন, “ভালো কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ ঠিকই। তবে এই নিষেধাজ্ঞায় কয়েকটি দ্রুত কাজের ওষুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.