সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের মহাসমাবেশ শনিবার। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে ওই দিন সকাল থেকে আকাশপথে নজরদারি চালাবে লালবাজারের আকাশযান ‘দুর্দান্ত’। নজরদারি চলবে কলকাতা পুলিশের আরও পাঁচটি ড্রোনের মাধ্যমেও। ব্রিগেড সমাবেশের যাবতীয় ছবি ক্যামেরায় লেন্সবন্দি করে প্রতি মুহূর্তে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়ে দেবে ‘দুর্দান্ত’। সেসব ছবি দেখে ব্রিগেড সমাবেশে পুলিশি ব্যবস্থা আরও জোরদার করবে লালবাজার।
এছাড়া ব্রিগেড সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও অতিরিক্ত ৬ হাজার পুলিশকর্মীকে কাজে নামানো হচ্ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে পথে নামছেন ট্রাফিকের পুলিশকর্মীরা। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত অন্তত ৮ হাজার পুলিশকে কাজে নামাতে হবে বলে অনুমান লালবাজারের। সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে থাকছে ৬টি ওয়াচ টাওয়ার। সেখানে উঠে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি থাকছে কলকাতা পুলিশের ১৫টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল। ব্রিগেডে আসা মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকছে ২০০টিরও বেশি পুলিশ পিকেট। থাকছে পুলিশের ১০টি কুইক রেসপন্স টিম। ব্রিগেডে যোগ দিতে আসা সমর্থকদের জন্য পানীয় জলের সমস্যা দূর করতেও উদ্যোগী লালবাজার। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকবে কলকাতা পুলিশের ২০০টিরও বেশি জলের ট্যাঙ্ক। থাকবে শতাধিক বায়ো টয়লেট।
[সভায় আসছে ৫০ লক্ষ লোক! ব্রিগেডে ভিড় বাড়ছে শহরে]
পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন রাস্তা ধরে ব্রিগেডমুখী মিছিলের জন্য যানজট তৈরি হতে পারে। তবে শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে মিছিল ব্রিগেডে পৌঁছে গেলে যানজট অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। ব্রিগেডমুখী মিছিল আসবে হাওড়া ব্রিজ, শিয়ালদহ, পার্ক সার্কাস, শ্যামবাজার, খিদিরপুর সহ ৬টি পয়েন্ট থেকে। কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত নগরপাল (সদর) জাভেদ শামিম জানিয়েছেন, “ব্রিগেডে আসা গাড়ি বা বাসগুলি পার্কিং করার জন্য ময়দানের ফাঁকা মাঠগুলিকে ঠিক করা হয়েছে। মাঠ ভর্তি হয়ে গেলেই বিভিন্ন রাস্তায় সেই সমস্ত গাড়ি বা বাসগুলি আটকে দেওয়া হবে। তখন গাড়ি বা বাস থেকে নেমে ব্রিগেড পর্যন্ত হেঁটে যেতে হবে।”
[‘বিজেপি ১২৫-এ থেমে যাবে’, ব্রিগেড পরিদর্শন করে হুঁশিয়ারি মমতার]
আজ, শুক্রবার বিকেল থেকেই একজন ডিসির নেতৃত্বে ব্রিগেডে পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। রাতেও থাকবে পুলিশ। বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে পুলিশি নজরদারি থাকছে। ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে এসে অনেকেরই গন্তব্য হয়ে ওঠে চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া। সেই কারণে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে একটু আগে থেকেই খুলে রাখার আবেদন করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়া চত্বরে যাতে সকলে ঢুকতে ও বেরোতে পারেন, তার জন্য সজাগ পুলিশ। ব্রিগেড সমাবেশের জন্য শনিবার শহরে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শনিবার ভোর চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শহরের সমস্ত রাস্তাতেই পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনেও গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্যাথিড্রাল রোড এবং হেস্টিংসের মাঝের রাস্তা, এজেসি বোস রোডে যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে হসপিটাল রোড, কুইন্স ওয়ে ও লাভার্স লেনে। ব্রিগেড সমাবেশের জন্য শনিবার ময়দানে ট্রাম চলাচলও বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া আরও বেশ কিছু রাস্তায় প্রয়োজনমতো গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে লালবাজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.