Advertisement
Advertisement
corona cases

‘পরিসংখ্যান দেখাবেন না, দক্ষিণ কলকাতাতেই আক্রান্ত লাখের বেশি হবে’, বিস্ফোরক ডা. কুণাল সরকার

অতিমারী আবহে বাংলায় ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে তুলোধোনা করলেন তিনি।

Dr. Kunal Sarkar slams Election Commission over surging corona cases | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:April 26, 2021 9:30 pm
  • Updated:April 27, 2021 1:20 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের পরিসংখ্যানে প্রতিদিনই বঙ্গবাসীর কপালের চিন্তার ভাঁজ গভীর হচ্ছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যান আসলে কিছুই নয়। বাস্তবে করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। যা সাধারণ মানুষের অগোচরেই থেকে যাচ্ছে। বাংলার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. কুণাল সরকার। পাশাপাশি এই অতিমারী আবহে বাংলায় ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে তুলোধোনা করলেন তিনি।

‘সংবাদ প্রতিদিন’কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ডা. কুণাল সরকার বলেন, জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই বোঝা গিয়েছিল দেশজুড়ে দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে। মুম্বইয়ের মতো দেশের বাকি অংশেও যে এই মারণ ভাইরাস নতুন করে নিজের প্রভাব বিস্তার করবে, তা আন্দাজ করা কঠিন ছিল না। তারপরেও ভোট প্রক্রিয়া শুরু হল। আগুন নেভানোর চেষ্টা না করে উলটে আগুনে ঘৃতাহুতি দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। প্রচার, মিটিং-মিছিলই এক ধাক্কায় অনেকখানি বাড়িয়ে দিল সংক্রমণ। এমনকী মার্চের মাঝামাঝি থেকে যখন করোনার তাণ্ডব শুরু হয়, তখনও অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের মতো কমিশন সবকিছুর অনুমতি দিল। কীভাবে সব দেখেশুনে কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিল? প্রশ্ন তুলছেন ডা. কুণাল সরকার। বাংলার এত বড় ক্ষতির জন্য কমিশনকে কাঠগড়ায় তোলা উচিত বলেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাসপাতালের শৌচালয়ে আত্মহত্যা প্রবীণ করোনা রোগীর, চাঞ্চল্য বেলেঘাটা আইডি-তে]

এখানেই শেষ নয়, ক্ষুব্ধ চিকিৎসক বলেন, “বাংলার বুকে কমিশন যে অরাজকতা চালিয়ে গেল, মন্বন্তরের সময় উইনস্টন চার্চিলও চালিয়ে যাননি। ওরা যা করেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। সাহস থাকলে আমার সঙ্গে প্রকাশ্যে আলোচনায় বসুন। চ্যালেঞ্জ রইল।”

তবে শুধু কমিশন নয়, একইরকমভাবে রাজনৈতিক দলগুলির ভূমিকারও চরম নিন্দা করেছেন তিনি। বলেন, “মানুষকে রাজনৈতিক পার্টিগুলোর দরকার শুধু বোতাম টেপা পর্যন্ত। তারপর কার কী হল, কোনও মাথা ব্যথা নেই। সব নেতা-অভিনেতা, যাঁরা মানুষের সাহায্যের জন্য ভোটের আগে এগিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের ৭ তারিখের পর দেখা যাবে তো?” মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর নাম করেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক। তাঁর কথায়, “মিঠুন চক্রবর্তী সাধারণের জন্য অনেক সাহায্য করেছেন। বহুদিন ধরে তাঁকে আমি সামনে থেকে দেখেছি। জনদরদী একজন মানুষ। অথচ তিনিই অতিমারীর মধ্যে ১০-১৫ হাজার লোক জড়ো করে বক্তৃতা দিচ্ছেন। অবিশ্বাস্য।”

সর্বোপরি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে কাঠগড়ায় তোলেন ডা. কুণাল সরকার। অতিমারীর সঙ্গে লড়াই যে ভীষণই কঠিন, তা গোপন করেননি। বলে দেন, “বীরভূম, বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তরবঙ্গের মতো জায়গায় যেখানে গতবার সংক্রমণ পৌঁছতে অনেক সময় লেগেছিল, সেখানে এবার নিমেষে থাবা বসিয়েছে। তার মধ্যেই পর্যাপ্ত RT-PCR সেন্টার নেই। মানুষ অক্সিজেন পাচ্ছে না। আর পরিসংখ্যান আমাকে দেখাবেন না। স্বাস্থ্যদপ্তর বলছে কলকাতায় দিনে আড়াই-তিন হাজার আক্রান্ত। আপনার মনে হয় এটা সত্যি? দক্ষিণ কলকাতাতেই সংখ্যাটা এক লক্ষের উপর হবে।” রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের দিকে কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ময়ূর সিংহাসনে বসার জন্য যাঁরা এত মেহনত করলেন, তাঁদের কাছে এই অসহায় মানুষদের ফোন আসছে? আসলে দয়া করে সাহায্য করুন।

[আরও পড়ুন: কঠিন সময়ের মুখোমুখি বঙ্গবাসী, রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা পেরোল ১১ হাজারের গণ্ডি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement