গৌতম ব্রহ্ম: নোবেল প্রাপক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে গান তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ সেই গান শুনতে শুনতে আমেরিকা রওনা হলেন দেশের গর্ব। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ বুধবার রাতে গানটি অভিজিৎবাবুকে পাঠায়। ব্যস্ততার কারণে তিনি তা শুনতে পারেননি। ভোররাতে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে মোবাইলে গানটি মন দিয়ে শোনেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অর্থনীতিবিদ। গানটির কথাকার, সুরকার এবং গায়ক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। সংবাদ প্রতিদিনের মাধ্যমে চিকিৎসককে ধন্যবাদও জানিয়েছেন নোবেল প্রাপক।
অর্থনীতির জটিল তত্ত্বকে অত্যন্ত সজহবোধ্য ব্যাখ্যা করেছেন অভিজিৎবাবু। বাংলা তথা দেশের গর্ব এই মানুষটির সংগীতের প্রতি ঝোঁক বহু বছর ধরে। উস্তাদ রশিদ খানের গান সামনে বসে শোনা তাঁর স্বপ্ন। সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষটি আগের রাতে মায়ের হাতের রান্না খেয়েছেন। বন্ধুদের কথা ফেরাতে পারেননি। অনেকের সঙ্গে দেখা করতে হয়েছে। রাতে ভাল ঘুম হয়নি। বিমানবন্দরে পৌঁছনোর আগে তাঁর নিরাপদ ও সুন্দর যাত্রাপথের প্রার্থনা করে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর শুভেচ্ছা বার্তা যায়। তুমুল ব্যবস্ততার মাঝেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে ভোলেননি বঙ্গ সন্তান। দেশের হাতুড়ে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আইনি বৈধতা দেওয়ার পক্ষে অভিজিৎবাবু।
তাঁর সেই ইচ্ছার বিরোধিতাও কম হয় না। চিকিৎসকদের মধ্যেও এই নীতিতে বিভাজন লক্ষ্য করা যায়। তবে অনির্বাণবাবুর মতো চিকিৎসকদের বক্তব্য, গ্রামে গিয়ে অনেকে কাজ করতে চান না। হাতুড়েরাই মূল ভরসা। তারপরও বিশ্বের অন্যতম সেরা অর্থনীতিবিদ যখন গরিব-গুর্বো মানুষের কল্যাণে কোনও কথা বলেন তার বিরোধিতা হয়। আর তাই যেন গানের কথা হয়ে ওঠে– “অন্ধ্র থেকে উদয়পুরে কেমন করে বাঁচছে মানুষ দিনপ্রতি স্রেফ এক ডলারে, এখনও তারা আধপেটা খায় সেই শরীরেই কোদাল চালায়, ধর্মতত্ত্ব বিষম নেশা শুধুই অর্থনাশী, সেই আফিমেই দুঃখ ভোলে তামাম বস্তিবাসী।”
অভিজিৎবাবু নোবেলের ঘোষণা মঞ্চে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও বক্তব্য পেশ করেছিলেন। গাড়িতে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে যাঁর উদ্দেশে লেখা তিনি নিজেই শোনেন– “বাংলা বলেন রাষ্ট্রপুঞ্জে, সেই অভিজিৎ নোবেল পাবেন, অপ্রিয় সব প্রশ্ন শুনে রাষ্ট্রশক্তি রেগেই যাবেন। এই অভিজিৎ আজ প্রবাসী প্রশ্ন তুলে অপ্রিয় সব নোবেল পেলে কেমন দেখা। মানব কেন বলবে এসব। একুশতলার জানলা থেকে গরিব কোথায় তাই দেখি না। এই অভিজিৎ নোবেল পেল, গরিব খুঁজে, না মানি না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.