ছবি: প্রতীকী
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ওমিক্রন (Omicron), ডেল্টা, ডেল্টা প্লাস যাই হোক না কেন, কোভিড কিন্তু হেরেছে ভ্যাকসিনের কাছে। তবে যাঁরা দুটি ডোজ পাননি অর্থাৎ বয়স্ক ও কোমর্বিডদের ক্ষেত্রে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ মারাত্মক আকার নিয়েছে। মৃত্যুও হয়েছে। এমনটাই বলছে স্বাস্থ্যভবনের শেষ সমীক্ষা।
করোনার তৃতীয় তরঙ্গে কোমর্বিডিটি বা উপসর্গ থাকা রোগীদের সমস্যা ও প্রোটোকল ঠিক করতে ডা. গোপালকৃষ্ণ ঢালির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ, সিএনসিআই এবং হাওড়ার বালিটিকুরি হাসপাতালের বয়স্ক ও কোমর্বিড রোগীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্যভবনে (Health Department) রিপোর্ট জমা দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। সেই রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় তরঙ্গের থেকে এবার কিন্তু বয়স্ক ও কোমর্বিডদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে বেশি ভরতি হচ্ছেন। অর্থাৎ যাঁরা আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের সমস্যা এবার অনেকটাই বেশি।
স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গে কোমর্বিডদের ৫১ শতাংশই হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। তুলনায় এবার অর্থাৎ তৃতীয় তরঙ্গে মোট কোমর্বিডদের ৭৮ শতাংশই সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। এটা যেমন চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের তেমনই আরও একটি তথ্য সামনে এসেছে সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে। সমীক্ষায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় ৩১-৪৫ বছর বয়সের গড় কোভিড সংক্রমিত ছিল মোট আক্রান্তের ১০.৬ শতাংশ। এবার অর্থাৎ তৃতীয় ঢেউয়ের সময় সংখ্যাটা কার্যত অর্ধেক। কারণ হিসাবে এক শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিকের অভিমত, “এই বয়সের নাগরিকদের সিংহভাগ টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন। ফলত, তাঁদের শরীরে কোভিড প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।”
সমীক্ষার তৃতীয় ধাপে দেখানো হয়েছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থাৎ গত বছরে ৪৬-৬০ বছরের গড় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮ শতাংশ। এবার অর্থাৎ তৃতীয় ধাপে সংখ্যাটা গত বছরের অর্ধেক। সংক্রমণ যেমন বয়স্কদের মধ্যে বেশি, আনুপাতিক হারে এবার মৃত্যুও বেড়েছে প্রবীণদের মধ্যে। বিশেষ করে ৬০-৭৫ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে। তিনটি হাসপাতালের তথ্য দিয়ে দেখানো হয়েছে, ৬০-৭৫ বছরের কোভিড রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার গড়ে ৪০-৪৬ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে তা ২০-২৭ শতাংশ।
ওই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্তার সাফ কথা, “ডেল্টা, ডেল্টা প্লাস বা ওমিক্রন যে ভ্যারিয়েন্টই হোক না কেন, টিকার জোড়া ডোজ মৃত্যু ও সংক্রমণ যে কমিয়ে দেয় তা স্পষ্ট। কম বয়সিরা যাঁরা এবারও ভ্যাকসিন নিতে পারেননি তাঁরা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালেও ভরতি হতে হয়েছে। তবে সংখ্যাটা কম। কারণ বেশিরভাগ কমবয়সিই জোড়া টিকা নিয়ে এবার তৃতীয় ডোজের অপেক্ষায়। তাই টিকা মাস্ট।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.