Advertisement
Advertisement

Breaking News

নিজের পছন্দ সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেবেন না, অভিভাবকদের পরামর্শ হাই কোর্টের

পড়ুয়াদের পাশে আদালত।

Don't force opinion on child: HC
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 14, 2019 10:06 am
  • Updated:January 14, 2019 10:11 am  

শুভঙ্কর বসু: বাবা মা’র ইচ্ছা সন্তানের উপর কোনও বিষয় চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। আগে বুঝে নেওয়া দরকার, বিষয়টি পড়ার মতো আগ্রহ ও মেধা সেই পড়ুয়ার আদৌ রয়েছে কি না। বারো ক্লাসের পরীক্ষা দিতে চেয়ে এক ছাত্রের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তার অভিভাবকদের উদ্দেশে এমনই মন্তব্যই করল কলকাতা হাই কোর্ট। মাধ্যমিক পাশের পর উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র বা ছাত্রী কোন বিষয় নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক, তা নির্ণয় করতে স্কুলগুলিকে পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের সুপারিশ করেছে উচ্চ আদালত।

কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন (সিআইএসসিই) বোর্ডের বারো ক্লাসের পরীক্ষা অর্থাৎ আইএসসিতে বসার অনুমতি না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাহুল তিওয়ারি নামে এক ছাত্র। তার কৌঁসুলির অভিযোগ, রাহুল বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। এগারো ক্লাসের পরীক্ষায় পাস না করা সত্ত্বেও, তাকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আগস্ট মাস নাগাদ রাহুল আইএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে তাকে বোর্ড জানিয়ে দেয়, একাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ায় জন্য রেজিস্ট্রেশন সম্ভব নয়। তাই সে চলতি শিক্ষাবর্ষের আইএসসি পরীক্ষায় বসতে পারবে না। স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয় রাহুল এবং তার পরিবার। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এরপর কোনও উপায় না দেখে সরাসরি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাহুল। চলতি শিক্ষাবর্ষে বারো ক্লাসের পরীক্ষায় বসতে চেয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি শেখর ববি সরাফের এজলাসে বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করে সে। সেই মামলায় রাহুলের আইনজীবী আদালতে জানান,  এগারো ক্লাসে অনুত্তীর্ণ হলেও গোটা বছর বারো ক্লাসেই পড়াশোনা করেছে রাহুল। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলের মাশুল ছাত্রটি দিতে পারে না। ছাত্রের ভবিষ্যতের কথা ভেবে, তাকে বারো ক্লাসের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হোক। অন্যদিকে, স্কুল কর্তৃপক্ষের পালটা বক্তব্য, বিষয়টি নজরে আসার পরই রাহুলের অভিভাবককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, রাহুলকে আবার এগারো ক্লাসে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু তাঁরা শোনেননি। সিআইএসসিই-র তরফে আদালতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, বোর্ডের অন্তর্গত আইএসসি আইন অনুযায়ী এগারো ক্লাসে ইংরেজি সহ অন্তত তিনটি বিষয়ে উত্তীর্ণ হলে তবেই তাকে বারো ক্লাসে পড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তা হয়নি। তাই ছাত্রটিকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যাবে না।

Advertisement

                                              [মহিলাদের সতীত্ব নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য, বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক]

সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর রাহুলের আবেদন নাকচ করে বিচারপতি সরাফ রাহুলকে ফের এগারো ক্লাসের পরীক্ষায় বসার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত জানিয়েছে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এই ছাত্রকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিলে, সেইসব পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে, যারা প্রচুর পরিশ্রমের পর সাফল্য পায়। সেইসঙ্গে বাবা,মাকে আদালতের পরামর্শ, ‘নিজেদের ইচ্ছাপূরণের জন্য জোর করে সন্তানের উপর কোনও বিষয় চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বরং বাবা,মায়ের উচিত সন্তানের সাধ্য ও ইচ্ছামতো তাকে পছন্দের বিষয় বেছে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া। এক্ষেত্রে এমনটা হয়নি বলেই এই ছাত্রকে আদালতে মামলা করতে হল।` এই সমস্যা সমাধানে রাজ্যের স্কুলগুলিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পছন্দের বিষয় নির্বাচনের জন্য ছাত্রদের কাউন্সেলিংয়ের সুপারিশ করেছে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘মাধ্যমিক স্তরের পর ছাত্র বা ছাত্রী কোন বিষয় নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক কিংবা কীসে পারদর্শী, তা যাচাই করতে স্কুলগুলির কাউন্সেলিং চালু করতে হবে।`

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement