Advertisement
Advertisement

বিরল অসুখে শুকিয়ে যাচ্ছে নার্ভ, হাসপাতালে জীবনযুদ্ধ শিশুর

ছোট্ট সৌম্যদীপকে বাঁচাতে সাহায্যের আরজি চিকিৎসকদের৷

Doctors plead for saving child suffering from rare disease
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:March 20, 2019 10:22 am
  • Updated:March 20, 2019 10:22 am  

অভিরূপ দাস:  রোজ দামি কফিশপে গিয়ে একঘণ্টা সময় কাটান? একদিন বরং সেখানে না গিয়ে সেই টাকা কোনও মহৎ কাজে লাগান। সাত বছরের খুদেকে বাঁচাতে পারে এক কাপ কফির দাম। খোদ ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের চিকিৎসকরা এমনই আবেদন রেখেছেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে।

[ভোটের মুখে হাবড়ায় মিলল অস্ত্রভাণ্ডারের হদিশ, গ্রেপ্তার ১]

আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছে স্নায়ু। বুকের পেশি কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে ক্রমশ। ভাল করে শ্বাস নিতে পারছে না সাত বছরের সৌম্যদীপ বৈদ্য। বিরল অসুখ গুলেনবারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত সে। এ অসুখে চিকিৎসার খরচ পাহাড় প্রমাণ! এক একটা ইঞ্জেকশনের দামই ষাট হাজার টাকা। নিম্নবিত্ত সৌম্যদীপের পরিবারের সামর্থ্য নেই সেই খরচ জোগানোর। তবে উপায়? চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন খোদ ডাক্তাররাই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সৌম্যদীপের ছবি দিয়েছেন ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ লিখেছেন, “আমরা শিশুটিকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আপনারাও একদিন না হয় বড় রেস্তোরাঁয় বা দামি কফিশপে না খেয়ে সে টাকা দিয়ে সাহায্য করুন সৌম্যদীপকে।” বিন্দু বিন্দুতে সিন্ধু জয়ের চেষ্টায় কোমর বেঁধেছেন সকলে। যা দেখে সৌম্যদীপের মা-বাবার চোখের কোণে চিকচিক করেছে জল। বলেছেন, “আমাদের একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে ডাক্তারবাবুরা যা করছেন তা অকল্পনীয়।”

Advertisement

[ তৃণমূল প্রার্থীকে লিড দিতে পারলে মিলবে পুরস্কার, ঘোষণা আসানসোলের মেয়রের]

নিম্ন মধ্যবিত্ত বৈদ্য দম্পতির একমাত্র সন্তান সৌম্যদীপ। বছর সাতের সৌম্যদীপ ৩ বছর আগে গুলেনবারি সিন্ড্রোম নামে এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়। অত্যন্ত বিরল এই অসুখে শরীরের সমস্ত নার্ভ শুকিয়ে যায় এবং পুরো শরীর আস্তে আস্তে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে। চিকিৎসক সূত্রে খবর, এই মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরেও চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে ছোট্ট সৌম্যদীপ প্যারালাইসিস থেকে মুক্ত হয়ে নতুন জীবন ফিরে পায়। কিন্তু এবছর জানুয়ারি মাসে আবার সেই মারণ রোগ হানা দেয় সৌম্যদীপের শরীরে। এবারে আরও ভয়ানক রূপ নিয়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একই জনের শরীরে দু’বার এই রোগের আক্রমণ অত্যন্ত বিরল। এক লক্ষে একজনের হয়তো তা হয়। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয়বার এই অসুখের ফলে সৌম্যদীপের সমস্ত শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা বন্ধ হয়ে যায়। যে পেশিগুলি শ্বাস নিতে সাহায্য করে সেগুলিও কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তড়িঘড়ি সৌম্যদীপকে ভেন্টিলেশনে রাখার ব্যবস্থা  করা হয়। গত দু মাস ধরে ছোট্ট সৌম্যদীপ ভেন্টিলেশনের নাগপাশে আবদ্ধ। আপাতত আইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমেই বেঁচে রয়েছে সে। বর্তমানে কথাও বলতে পারছে না সে। কিন্তু তার চোখের ভাষা বোঝাতে চায় যে, আবার বাড়ি গিয়ে ক্রিকেট খেলতে চায় সে। সেই স্বপ্নই সত্যি করতে চান চিকিৎসকরাও। দামি ইঞ্জেকশন, বহুমূল্য ওষুধের প্রয়োজন সৌম্যদীপের। গত দুমাস ধরে চলতে থাকা এই অসম যুদ্ধে ওই খুদের বাবা-মা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত। ডা. গিরি জানিয়েছেন, আমরা হাল ছাড়তে রাজি নই। আমাদের পুরো পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট টিম লড়ছে। আমরা সবাই ছোট্ট সৌম্যদীপকে আবার ব্যাট হাতে দাঁড়াতে দেখতে চাই। তাঁদের বিশ্বাস, সাহায্য মিলবে, সাফল্য আসবে। ফের ব্যাট হাতে দাঁড়াবে সৌম্যদীপ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement