গৌতম ব্রহ্ম: এবার পাল্টা মার!
ছুরি-কাঁচি চালানোর ফাঁকে এবার হাত-পা-ও চালাবেন ডাক্তাররা! প্রথম ক্ষেত্রে অন্যকে বাঁচানোর জন্য ওটিতে৷ দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নিজেকে৷ রোগীমৃত্যুর পর গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর করাটা এখন প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে৷ রবিবার রাতে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজেও এমনই হামলা হয়েছে৷ রোগীর পরিজনদের একাংশ অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে বেধড়ক মারধর করেছে জুনিয়র ডাক্তারদের৷ দশজন জখম হয়েছেন৷
হামলা চালিয়ে বেরনোর সময় ডাক্তারদের শাসিয়েছে রোগীর পরিজনরা৷ গলার সামনে স্ক্যালপ্যাল ধরে বলেছে, “রোগীর মৃত্যু হলে তোদেরও মেরে ফেলব৷” একজন আবার একধাপ এগিয়ে বলেছে, “সবার মাথার খুলি উড়িয়ে দেব৷” ওই রক্তচক্ষুর সামনে ঠকঠক করে কেঁপেছেন ডাক্তারদের একাংশ৷
এবার কিন্তু ডাক্তারদের মারলে পাল্টা মার জুটবে কপালে৷ বিশ্বাস না হলে আবার পড়ুন৷ এনআরএসের ডাক্তাররা এবার কোরিয়ান মার্শাল আর্ট ‘তাইকোন্ড’ শিখবেন৷ হাসপাতাল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়৷ অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্য প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন৷ সকলে একবাক্যে সায় দেন৷ দু’দিনের মধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডা. সুশান্ত বন্দ্যেপাধ্যায়ের কাছে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবটি ফাইল আকারে পাঠানো হবে৷
জানা গিয়েছে, প্রখ্যাত তাইকোন্ড বিশারদ মাস্টার প্রদীপ্তকুমার রায়ের কথাই প্রশিক্ষক হিসাবে ভাবা হয়েছে৷ প্রদীপ্তবাবু ‘সাউথ-ওয়েস্ট এশিয়া’-র তাইকোন্ডর সদর কমিটিতেও রয়েছেন৷ কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চলা ‘সুকন্যা’ প্রকল্পেরও মুখ্য প্রশিক্ষক এই প্রদীপ্তবাবু৷ স্বভাবতই এনআরএসের ‘অটোম্যাটিক চয়েস’ হয়েছেন তিনিই৷ এনআরএসের মাঠেই কাজের ফাঁকে চলবে প্রশিক্ষণ৷
ছাত্ররাও খুশি দেবাশিসবাবুর প্রস্তাবে৷ তাঁদের বক্তব্য, “আমাদের নিরাপত্তার জন্য তো অনেক ব্যবস্থাই হল৷ তা-ও তো মার খাচ্ছি৷ রবিবার মার খেয়ে আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন৷ নিজের প্রাণের চেয়ে প্রিয় আর কিছু হতে পারে না৷” এই কোরিয়ান মার্শাল আর্টের ধরনই হল আত্মরক্ষার স্বার্থে বিপক্ষকে পাল্টা আক্রমণ করতেই হয়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.