অভিরূপ দাস: বাংলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। যাঁর মধ্যে কো-মর্বিডিটি বা অন্যান্য শারীরিক অসুখ ছিল ১১ হাজারের। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই অন্যান্য অসুখের মধ্যেই একটা সিওপিডি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (Chronic obstructive pulmonary disease)। শরীরে করোনা প্রবেশ করলে ফুসফুসের এই মারণ অসুখ আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
শেষ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলায় সিওপিডি আক্রান্ত মানুষ ৫০ লক্ষেরও বেশি। অর্থাৎ অর্ধ কোটিরও বেশি মানুষের ফুসফুস স্বাভাবিক ভাবে কাজ করে না। বায়ুস্ফীতিজনিত সমস্যার কারণে এঁদের ফুসফুসে স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহ হয় না। এমন ব্যক্তিদের ফুসফুসে করোনা আঘাত করলে কী হবে? তা ভেবেই শিউরে উঠছেন চিকিৎসকরা।
ফুসফুসরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিতা রায় সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ধূমপায়ীদের মধ্যে এ অসুখ গা সওয়া। দীর্ঘদিন সিগারেটের ধোঁয়া ইনহেল করার ফলে প্রথমে শ্বাসনালী, পরে ফুসফুস ক্রমশ অকেজো হতে শুরু করে। অবিলম্বে সিগারেট বর্জন করা উচিত। সে কারণে ৩১ মে বিশ্ব তামাক বর্জন দিবসকেই (world no tobacco day) হাতিয়ার করতে বলছেন চিকিৎসকরা।
ফুসফুসে এ অসুখে বাংলায় তো বটেই সারা পৃথিবীতে ফি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যান। মাত্র ৬ বছর আগে ২০১৫ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ৩১ লক্ষ। পিছিয়ে নেই এ রাজ্যও। সারা দেশের মধ্যে সিওপিডিতে ভুগে মৃত্যুতে পঞ্চম স্থানে বাংলা। ভয়ংকর এই পরিসংখ্যান দেখে আতঙ্কিত চিকিৎসকরাও। করোনা এখনই বিদায় নেবে না। অবিলম্বে ধূমপান ত্যাগ না করলে বাংলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে এরই মধ্যে জেলায় জেলায় সিওপিডি রোগীদের চিহ্নিত করণের কাজও থমকে। গত বছরই রাজ্যজুড়ে সিওপিডি অ্যাজমা ক্লিনিক খুলেছিল রাজ্য সরকার। সিওপিডি রোগীদের সমস্যা উদঘাটনে এই সমস্ত ক্লিনিকে পালস অক্সিমিটার ছাড়াও পোর্টেবল স্পাইরোমিটার, নন ইনভেশিভ ভেন্টিলেটর রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। জেলাজুড়ে চালু হওয়া এই ক্লিনিকগুলি সপ্তাহে দু’দিন করে কাজ করার কথা ছিল। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, কোভিডের বাড়বাড়ন্তে এই ধরনের ক্লিনিকগুলি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সমস্ত চিকিৎসকরা কোভিড ডিউটিতে ব্যস্ত থাকায় ক্লিনিকে চিকিৎসকও পাওয়া যাচ্ছে না। যার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে সিওপিডি রোগী চিহ্নিতকরণের কাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.