ছবি: প্রতীকী।
অর্ণব আইচ: কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দে পুলিশেরও হতে পারে বিভ্রান্তি। সবুজ বোমার আড়ালে ফাটতে পারে চকোলেট বোমা, শেল বা দোদোমা। তাই বেআইনি শব্দবাজি রুখতে মধ্য কলকাতার বড়বাজার অঞ্চলের একের পর এক গোডাউনে শুরু হল পুলিশের তল্লাশি।
পুলিশ জানিয়েছে, এবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানোর অনুমতি দিলেও তা ‘সবুজ বোমা’ হতেই হবে, এমনই নির্দেশ। আর তাতেই ধন্দ শুরু হয়েছে পুলিশের মধ্যে। প্রায় ২৫ বছর ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যে শব্দবাজি নিষিদ্ধ। তাই কালীপুজো, দীপাবলি (Diwali 2023) বা ছটপুজোর সময় পুলিশের নজর থাকে শব্দবাজির দিকে। কোথাও বাজির শব্দ শুনতে পেলে বা কোনও অভিযোগ এলেও সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে গিয়েছে পুলিশ। যারা শব্দবাজি ফাটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে আইনি ব্যবস্থা। শব্দবাজি নিয়ে রকমফেরের কথা কখনও পুলিশকে ভাবতে হয়নি। অনেকে চোরাপথে শব্দবাজি কিনলেও পুলিশের ভয়ে তাদের পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এই বছরও নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো যাবে না।
কিন্তু ‘সবুজ শব্দবাজি’, যার শব্দের মাপ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত, এমন বাজি ফাটানো যাবে। ওই ধরনের বাজি সম্পর্কে পুলিশও জানার চেষ্টা করছে। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, তাঁরা অপেক্ষা করে রয়েছেন শনিবারের জন্য। এদিনই টালা পার্কে বাজি পরীক্ষা করবে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ। তাতে ‘সবুজ শব্দবাজি’র বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হবে পুলিশের কাছে। যদিও পুলিশকর্তাদের মতে, ‘সবুজ শব্দবাজি’ হয়তো পরিবেশ বান্ধব। কিন্তু শব্দদূষণে তা হয়তো অন্যান্য নিষিদ্ধ শব্দবাজির থেকে কম না-ও হতে পারে। ফলে বাজি ফাটানোর শব্দ শুনতে পাওয়া গেলেও তা আসলে নিষিদ্ধ শব্দবাজি না কি বৈধ ‘সবুজ শব্দবাজি’, তা বোঝা খুব সহজ না-ও হতে পারে।
তাই এখন থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের হাতে রয়েছে লাইসেন্স রয়েছে, এমন বাজি ব্যবসায়ীদের তালিকা। তাঁরাই শুধু গোডাউনে বাজি মজুত করতে পারেন। তাঁদের গোডাউন ছাড়া অন্য কোনও গোডাউনে বাজি মজুত করা আছে কি না, এখন থেকেই তার খোঁজ চালাতে শুরু করেছে পুলিশ। বড়বাজার, পোস্তা, জোড়াবাগান, জোড়াসাঁকো-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় গোডাউনে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে পুলিশের তল্লাশি। সংশ্লিষ্ট থানা ছাড়াও রিজার্ভ ফোর্স, গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা চালাচ্ছেন এই তল্লাশি। কারণ লাইসেন্সবিহীন কোনও গোডাউনই কোনও ধরনের বাজিই মজুত করতে পারেন না। যদিও এক পুলিশকর্তা জানান, এখনও কোনও গোডাউন থেকে বেআইনি বাজি ধরা পড়েনি।
তবে বৈধ গোডাউনগুলিতেও তল্লাশি চালিয়ে দেখা হয়েছে, কিউ আর কোড-সহ বৈধ বাজি ছাড়া সেখানে কোনও নিষিদ্ধ আতসবাজি বা শব্দবাজি মজুত করা রয়েছে কি না। লালবাজারের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি থানাকে বলা হয়েছে, শহরের চারটি বাজি বাজার ও বৈধ দোকান ছাড়া যাতে কোথাও বাজির দোকান না বসে, সেদিকে নজর দিতে। কারণ, বৈধ বাজির দোকান ছাড়া যে বাজি বিক্রি হবে, তা আদতে নিষিদ্ধ আতসবাজি বা শব্দবাজিই হবে বলে অভিমত পুলিশের। এ ছাড়াও কালীপুজো থেকে ছট পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটলে সেখানে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা পুলিশের। সেই বাজি আদৌ ‘সবুজ বাজি’ কি না, কিউ আর কোড পরীক্ষা করে তা খতিয়ে দেখা হবে। কোড না মিললে তা নিষিদ্ধ বাজি হিসাবেই গণ্য করা হবে। সেই ক্ষেত্রে আইন মেনে গ্রেপ্তারিও হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.