রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শোভন চট্টোপাধ্যায় বা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি ত্যাগ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার। এতে দলের কিছু যাবে, আসবে না। এভাবেই শোভন-বৈশাখীকে প্রায় গুরুত্বহীন করে মন্তব্য বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। বললেন, ‘বিজেপির সঙ্গে ওঁদের ঘনিষ্ঠতা কতই বা ছিল? কেউ বাচ্চা ছেলে নয় যে ললিপপ দিয়ে দলে নিয়ে এসেছি। এবার ওনারা কী করবেন, সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
দীর্ঘদিন ধরে ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে থাকার পর নিতান্তই অভিমান করে দল ছেড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। দিল্লি গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। নেপথ্যে ছিলেন একদা দলত্যাগী তৃণমূল নেতা মুকুল রায়। তাঁর হাত ধরেই দিল্লিতে বিজেপি কার্যালয়ে গিয়ে হাতে পতাকা তুলে নিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শিবির বদলের পরই যে এতদিনকার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি একরাতের মধ্যে পালটে ফেলবেন তাঁরা, তেমনটা নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল, নামেই শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপি নেতা। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে তাঁর যোজন দূরত্ব। বিশেষত এ রাজ্যে দলের সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর মোটেই সদ্ভাব গড়ে ওঠেনি। তাই কেউ কাউকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ।
পরবর্তী সময়ে অবশ্য এও স্পষ্ট হতে থাকে যে দলবদল করলেও তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্নতা দূরে থাক, বরং বেশ যোগাযোগ রয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিভিন্ন সময়ে শোভনের বাড়িতে তৃণমূল নেতাদের যাতায়াত কিংবা বৈশাখীর ঘাসফুল শিবিরের হেভিওয়েট নেতাদের দ্বারস্থ হওয়া, এসব খবর পৌঁছচ্ছিল বিজেপির অন্দরেও। তাই দলে শোভন-বৈশাখী গুরুত্ব দিতে আরও নারাজ হয়ে পড়েন দিলীপ ঘোষ। এর মধ্যে শুক্রবারই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসে নিজের কলেজের সমস্যা নিয়ে গিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ আলোচনার পর বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও উসকে দেন। তারপর থেকেই প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছিল, বিজেপি ছাড়ছেন তাঁরা?
শনিবার বিজেপি রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিকরা দিলীপ ঘোষকে এই সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে, তিনি কিছুটা উদাসীনতার সুরেই বললেন, ‘বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কতই বা ছিল? জবরদস্তি করে তো কাউকে পার্টি করাতে পারি না। কেউ বাচ্চা ছেলে নয় যে ললিপপ দিয়ে দলে নিয়ে এসেছি। ওঁরা কী করবেন সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার।’ এরপর দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘আমাদের মন বড়, দরজা খোলা। অনেকেই আসছেন, তবে সবাই তো আর নেতা নন। কেউ কেউ সাধারণ কর্মী। ওঁরাও তো কেউ নেতা পদমর্যাদার নন।’ বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে শোভন-বৈশাখীর বিজেপি ত্যাগকে খুব গুরুত্ব দিতে চাইছেন না তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.