রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দিল্লির মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাই। দেশের প্রথম বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবেন তৃণমূল সুপ্রিমোই। এতদিন এই দাবি করছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। এবার একথা বললেন, রাজনৈতিকভাবে মমতার চরম বিরোধী তথা প্রধান শত্রু বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে, কি নতুন কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত দিলেন দিলীপ? তৃণমূল বিজেপি আঁতাতের তত্ত্বই কি তবে সত্যি? আপাতত এমন কিছু ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। দিলীপ ঘোষ এই মন্তব্য কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করেননি। আজ খাতায় কলমে মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিন। মমতাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েই বিজেপি রাজ্য সভাপতি কোনও বাঙালিকে প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আর সেই তালিকায় তাঁর প্রথম পছন্দ তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও নিন্দুকেরা কটাক্ষ করে বলছেন, এ যেন ভূতের মুখে রামনাম।
এদিন মমতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “উনি বাংলার মুখ। ওনার সুস্থতা ও সাফল্য কামনা করি। ওনার সুস্থ থাকাটা দরকার। কারণ ওনার সুস্থতার উপরেই বাংলার ভাগ্য নির্ভর করছে।” এরপরই বোমাটি ফাটান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “মমতার সুস্থ থাকাটা প্রয়োজন এজন্যেই বলছি কারণ বাঙালি হিসেবে যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে ওনার সুযোগ আছে। জ্যোতিবাবুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু দল হতে দেয়নি। তাই ওনার (মমতার) নামই এক নম্বরে আছে। এর আগে প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, একজন বাঙালির প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রয়োজন।” দিলীপবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, বিজেপি যদি ২০১৯-এ জেতে তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে প্রধানমন্ত্রী হবেন? প্রশ্নের জবাবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “তারপরে হতে পারেন, ওনার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।” এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, খাতায় কলমে পাঁচ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন হলেও আসলে শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিন নয়। তিনি জন্মেছিলেন দুর্গাপুজোর সন্ধিপুজোর দিনে। তাই, এদিন বিশেষ কোনও রাজনৈতিক নেতাদের মমতার জন্মদিন পালন করতে দেখা যায়নি।
এমনিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান সমালোচক হিসেবেই পরিচিত দিলীপ ঘোষ। এতদিন পর্যন্ত মমতার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাকে অলীক কল্পনা বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। দিলীপবাবু এদিন যে মার্জিত ভাষায় মমতা সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছেন তা সত্যিই বিরল। ঠিক কী উদ্দেশ্যে দিলীপ এই মন্তব্য করেছেন, বা তাঁর আদৌ কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কিনা, এসব রাজনৈতিক কাঁটাছেড়ার বিষয়। তবে, মমতার প্রতি দিলীপের এহেন নরম মনোভাব দেখে ভ্রু কুঁচকেছেন অনেকই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.