সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধানসভা ভোটের মুখে বাংলায় সংখ্যালঘু-দরদী হিসেবে কি নিজেদের ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব? হাওড়ার পাঁচলার জনসভায় বিজেপি রাজ্য সভাপতির মুখে মুসলিম-প্রীতির কথায় অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। বাংলায় মুসলিমদের এতদিন ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থে। এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি ফের ‘তোষণ’ রাজনীতির অভিযোগ তুলে মুসলিমদের প্রকৃত অধিকারের পক্ষে সওয়াল করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
হাওড়ার সভায় তিনি বললেন, ”এতদিন বাংলার মুসলিমদের কোনও উন্নয়ন করা হয়নি। প্রকৃত অধিকার থেকে তাঁরা বঞ্চিত। এখন তা স্পষ্ট বুঝছেন এ রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষজন। ভারতের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের সমান অধিকার আছে। যতটা অধিকার আমার, আপনার আছে, ততটাই অধিকার আছে আব্বাস সিদ্দিকি, ওয়েইসিদের। তাই তাঁরা নিজেদের মতো করে লড়ছেন।”
হায়দরাবাদের AIMIM নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েইসি (Asaduddin Owaisi) ‘ভোট কাটোয়া’ বলেই পরিচিত রাজনীতিতে। সম্প্রতি বিহার ভোটে লড়াই করে জোটবদ্ধ কংগ্রেস-আরজেডি’র ভোটব্যাংকে তারা থাবা বসিয়েছে। এবার বঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনেও মিম প্রার্থী দেবে বলে ঠিক করেছে। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। ফুরফুরা শরিফে গিয়ে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করেছেন মিম সুপ্রিমো ওয়েইসি নিজে। চলছে লাভ-ক্ষতির অঙ্ক কষা। বাংলায় মিমের টার্গেট অবশ্যই মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলি। সেখানেই তারা প্রার্থী দিতে চান। মালদহ, মুর্শিবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলায় মিমের সংগঠনগুলি নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ ওয়েইসির মিমকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে মনে করে। এবার মুসলিমদের অধিকারের কথা তুলে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সেই মিমকেই কার্যত সমর্থন করে বসলেন। হাওড়ার সভায় তাঁর আরও বক্তব্য, ”রাজ্য সরকার মুসলিমদের তোষণ করে। আমরা করি না। কারণ, আমাদের কাউকে তোষণ করার প্রয়োজন হয় না। কেউ যদি মনে করেন, বিজেপি কাজ করছে, তাহলে ভোট দেবেন। যদি মনে করেন, কাজ করছে না, ভোট দেবেন না। এটা মানুষের নাগরিক অধিকারের বিষয়।”
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, মিম ভোটে লড়লে তৃণমূলের যে ৩৫ শতাংশ মুসলিম ভোট ব্যাংক অক্ষুণ্ণ ছিল এতদিন, তাতে নিশ্চিতভাবে ফাটল ধরবে। তাতে বিজেপির পরোক্ষে লাভ যথেষ্টই। ভোটের সেই পাটিগণিত বুঝেই কি আচমকা তাঁদের সমর্থন করলেন দিলীপ ঘোষ? এই প্রশ্ন উঠছেই। নইলে সংখ্যালঘুদের অধিকার পাইয়ে দিতে গেরুয়া শিবিরকে আর সেভাবে কবেই বা ভাবতে দেখা গিয়েছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.