রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়: আতঙ্কের প্রহরে শহরবাসীকে আশ্বস্ত করতে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভূমিকায় বেজায় ক্ষুব্ধ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমে চাল বিলি করে নিজেই লকডাউন ভাঙছেন।” এদিকে করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। সেই পর্যবেক্ষক দলের ভয়ে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। একইসঙ্গে রাজ্যে রেশনের অব্যবস্থা নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে তুলোধনা করতে ছাড়েননি দিলীপবাবু। পাশাপাশি, রাজ্যে করোনা চিকিৎসায় আয়ুশের পদ্ধতি ব্যবহার করার দাবি জানান তিনি।
গত কয়েকদিন ধরেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। সচেতনতার প্রচারও করছেন। বুধবার তাঁর এই কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপবাবুর কথায়, “কেন্দ্র সরকার আগেই বিভিন্ন হটস্পট এলাকায় লকডাউন নিশ্চিত করতে বলেছিল। সেই সময় রাজ্য কথা শোনেনি। আজ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলকে দেখে ভয় পেয়ে এসব করছে।” রাজ্যজুড়ে রেশনের অব্যবস্থার জন্য খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দায়ী করেন দিলীপবাবু। তাঁর কথায়, “খাদ্যমন্ত্রীর লজ্জা হওয়া উচিত। সারা রাজ্যে রেশন পৌঁছে দিতে পারেন না। ওঁর জেলায় বসিরহাট থেকে বাদুড়িয়া সর্বত্র রেশনের দাবিতে বেশি গন্ডগোল হচ্ছে।” একইসঙ্গে তাঁর সতর্কবার্তা, “খাদ্যমন্ত্রীর সাবধানে রাস্তায় বের হওয়া উচিত। মানুষ ওঁর উপর ক্ষিপ্ত।” এদিনও দিলীপবাবু রাজ্য করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করছে বলে অভিযোগ করেন। এমনকী, রাজ্যপাল-রাজ্য দ্বন্দ্ব নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপবাবুর কথায়, “রাজ্যপাল সত্যি কথা বলছে। রাজ্যের ভাল চান, তাই বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী ওঁর সঙ্গে যে ব্যবহার করছেন তা মেনে নেওয়া যায় না।”
এদিকে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুশ মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, শুধু করোনা প্রতিরোধে নয়, করোনা রোগীর চিকিৎসায়ও আয়ুশ অর্থাৎ আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধ, হোমিওপ্যাথি পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। বিভিন্ন রাজ্যে করোনা চিকিৎসায় আয়ুর্বেদ পদ্ধতিকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়ুশ চিকিৎসকদের এখনও করোনা যুদ্ধে শামিল করেনি। কেন্দ্রের প্রোটোকল মেনে পশ্চিমবঙ্গের সরকারও যাতে করোনা চিকিৎসায় আয়ুশ পদ্ধতি ব্যবহার করে সে জন্য রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানাতে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এ বিষয়ে কেন্দ্র যাতে রাজ্যকে বলে সে জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দিতে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “ভাল ভাল আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা এ রাজ্যে আছেন। তাদেরকে করোনা চিকিৎসায় কাজে লাগানো হচ্ছে না। সব দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সর্বনাশ করছে তৃণমূল সরকার।” একই রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় টিমকেও বিষয়টি জানাবেন দিলীপ ঘোষ। যাতে এ রাজ্যে করোনা চিকিৎসায় দ্রুত আয়ুর্বেদ পদ্ধতি চালু করার জন্য সুপারিশ করে তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.