রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্য সভাপতি, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি, সাংসদ। গত দু-তিন বছরে একে একে সব রাজনৈতিক পরিচয় হারিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এখন তিনি সাধারণ বিজেপি নেতা। সেভাবে দলের তরফে কোনও কর্মসূচিও দেওয়া হয় না। রাজ্য নেতৃত্ব যোগাযোগও রাখে না। এই পরিস্থিতি না বদলালে রাজনীতিতে থাকতে ‘নারাজ’ দিলীপ ঘোষ। শুক্র সকালে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি একপ্রকার বিস্ফোরণ ঘটালেন। বলে দিলেন, ‘দল এর পর নির্দিষ্ট কাজ না দিলে রাজনীতিকে টাটা-বাই বাই করে দেব।’
বছর কয়েক আগেও বঙ্গ বিজেপির শেষ কথা ছিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বস্তুত বিজেপি নেতাদের অনেকেই মেনে নেন, রাজ্যে বিজেপির যেটুকু জমি তৈরি হয়েছে, তার নেপথ্যের অন্যতম কারিগর দিলীপ। তাঁর সভাপতিত্বেই বঙ্গে বিজেপি ১৮ জন সাংসদ পেয়েছিল। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। অথচ সেই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এই মুহূর্তে দলের রাজ্য নেতৃত্বের সেভাবে যোগাযোগ নেই। লোকসভায় হারের পর তাঁর গুরুত্ব যেন আরও কমেছে। লোকসভার ফলাফলের পর একবারই গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য দপ্তরে। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও নতুন করে আর কোনও দায়িত্ব দেননি তাঁকে। নতুন কোনও দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি।
দিলীপ ঘোষ বলছেন, এভাবে ‘প্রাক্তন’ হিসাবে বেশিদিন কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির স্পষ্ট বক্তব্য, “আমি এভাবে থাকতে পারব না। এবার দল নির্দিষ্ট কাজ না দিলে রাজনীতিকে টা টা-বাই বাই বলে দেব। যত ক্ষণ দলে রয়েছি, তত ক্ষণ কাজ করে গেলেও একটা সময়ের পরে তো সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। রাজনীতি ছাড়াও সমাজের অনেক কাজ রয়েছে।”
লোকসভার ফলপ্রকাশের পর দিলীপ ঘোষ নিজের মতো জেলায় জেলায় যাচ্ছেন। দলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছেন। কিন্তু দলের রাজ্য নেতাদের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও সেভাবে যোগাযোগ রাখেনি। মাঝে তাঁকে ফের রাজ্য সভাপতি করা হবে বলে জল্পনা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সে জল্পনাও আর গতি পায়নি। সেকারণেই সম্ভবত ‘হতাশ’ দিলীপ। স্পষ্ট করে দিলেন, অনন্তকাল অপেক্ষা নয়। এবার তাঁর কথা ভাবতেই হবে দলকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.