রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মান-অভিমানের পালা শেষে কিছুটা যে বরফ গলেছে, ভাইফোঁটায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক মন্তব্যে বোঝাই যাচ্ছিল ‘হানিমুন পিরিয়ড’ পার হওয়ার পর পদ্ম শিবিরে মোহভঙ্গ হয়েছে তাঁদের। এবার শোভনবাবুর নিরাপত্তাও ফিরিয়ে দিয়েছে নবান্ন।
উপরোক্ত গোটা পর্ব যে মোটেও ভাল চোখে দেখছে না বঙ্গ বিজেপি তা এদিন স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর কটাক্ষ, “রাস্তায় একটা টাকা কুড়িয়ে পেয়েছিলাম সেটা হাতে নিয়ে দান করে দিয়েছি। তাতে আমাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।” ফের ‘কাননের’ হাওয়াবদল থুড়ি দলবদলের জল্পনা উসকে দিলীপবাবু আরও বলেন, “শোভনকে আমরা কোনও দায়িত্ব দিইনি। উনি বিজেপিতে সক্রিয় ছিলেন না। যোগ দেওয়ার পর একবারই পার্টি অফিসে এসেছিলেন। অমিত শাহর সভার আগে আমি ফোন করেছিলাম। তিনি ফোন ধরেননি। আমরা বহিষ্কার করি না, সংস্কার করি। ওনাকে আমরা স্বীকার করেছি এই মাত্র।”
এরপরই শোভনের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা প্রসঙ্গে কিছুটা বিরক্ত হয়েই বলেন, ‘যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা দেখতে এসেছিলেন এখানে থাকা যায় কি না। এসেছেন, দেখেছেন। উনি থাকবেন কি থাকবেন না সেটা ওনার বিষয়। শোভন নিয়ে আমাদের কোনও মুখ পোড়েনি। রাজনীতিতে আসা যাওয়া লেগে থাকে। অনেকে এসেছেন, কিছুজন ফিরে গিয়েছেন। কেন ফিরেছেন সবাই জানে। তাঁদের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। ভয় দেখানো হয়। অনেক লোক পার্টিতে রয়েও গিয়েছেন।’ পাশে থাকা জয়প্রকাশ ও শিশির বাজোরিয়াকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরপরই তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। তারপর কেটে গিয়েছে আড়াই মাস। সম্প্রতি ভাইফোঁটা উপলক্ষে ফের মমতার বাড়িতে হাজির হন শোভন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, ধীরে ধীরে দূরত্ব কমছে দিদি ও ‘কাননের’। তার তিনদিন পরেই প্রাক্তন মেয়রের ওয়াই ক্যাটেগরি নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিয়েছে নবান্ন। কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন গোলপার্কের ফ্ল্যাটে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। তখনও তাঁর সঙ্গে ছিল রাজ্যের দেওয়া ওয়াই ক্যাটেগরি নিরাপত্তা। কিন্তু আড়াই মাস আগে শোভন-বৈশাখী বিজেপিতে যোগ দিতেই তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেয় রাজ্য।
গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে হাজির হন শোভন-বৈশাখী। প্রিয় দিদির থেকে ভাইফোঁটাও নেন। জানা গিয়েছে, বৈশাখীকেও বোনফোঁটা দেন মমতা। তারপরেই শোভনের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ভুঁড়ি কমানোর পরামর্শ দেন। কিছু ওযুধ খাওয়ার কথা বলেন।
[আরও পড়ুন: শ্রমিক খুনের জের, নিরাপত্তার স্বার্থে কাশ্মীরে কর্মরতদের রাজ্যে ফেরাতে তৎপর প্রশাসন]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.