অভিরূপ দাস: কলমের খোঁচায় পকেট ফুটো হয়। এ পেনের দামে আগুন লাগতে পারে মানিব্যাগে। মহার্ঘ বললেও কম। জার্মান (Germany) কোম্পানির এই ঝরনা কলমের দামে দিব্যি কেনা যাবে অত্যাধুনিক চার চাকার গাড়ি! দশ-বিশ হাজারেও হবে না। এ ঝরনা কলমের মালিক হতে গেলে দিতে হবে ৭ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা! ইউরোপের রাইন নদীর তীরের স্ট্যাডলার কোম্পানির এই পেন আপাতত কলকাতার (Kolkata) সবচেয়ে দামি কলম। যা কিনে বাড়িতে রাখতে গেলে লাগাতে হবে সিসিটিভি। চুরি হয়ে গেলে কী হবে। সোনার দোকানে যেমন সিসিটিভি লাগানো থাকে তেমন বন্দোবস্ত করতেই হবে বাড়িতে।
আইসিসিআর-এ স্ট্যাডলারের স্টলে কাচের বাক্স ঘেরা হীরকখচিত মহা মূল্যবান কলম। বাক্সে হাত দিলেই সাইরেন বাজছে। পাছে হাতসাফাই করেন কেউ, তাই এমন ব্যবস্থা। কয়েকদিন তার ঠাঁই হয়েছিল প্রদর্শনীতে। তারপরও যদি কেউ এই পেন কিনতে চান আসতে হবে ব্রেবোর্ন রোডের টোবাকো হাউসে। সেখানেই স্ট্যাডলারের কলকাতার অফিস। টোব্যাকো হাউসে এই পেন রয়েছে। কিন্তু মাত্র একটিই। গোটা পৃথিবী জুড়ে এই পেনই যে রয়েছে সর্বসাকুল্যে গুটিকয়েক।
সংস্থার কর্মচারীরা জানিয়েছেন, স্ট্যাডলার কোম্পানি মাত্র ৪৮ টি এমন পেন তৈরি করেছিল। ভারতের জন্য বরাদ্দ মাত্র দুটিই। তারই একটি রয়েছে আপাতত এই শহরে। এমন পেন যে হাত থেকে পড়ে গেলে মাথায় হাত দিতে হবে। কারণ? পেনের নিবটাই যে ১৮ ক্যারাটের নিখাদ সোনার! সে সমস্ত দিক চিন্তা করে সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে দু’বছরের ওয়ার্যান্টি। তার মধ্যে হাত থেকে পড়ে নিব ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করে দেওয়া হবে। ঢাকনাসুদ্ধ এমন পেনের ওজন ২১ গ্রাম। আসমানি রঙের গায়ে সোনার জল করা। রোদের আলো পেনের ঢাকনায় পড়লে ঝলসে যাবে চোখ। আর ঢাকনায় বসানো ‘মহারাজা কাট’ হিরে। গোনাগুনতি ৪৮ টা!
সেই হীরেরও রয়েছে ওয়ার্যান্টি। দু’বছরের মধ্যে হীরে খুলে গেলে নিখরচায় তা লাগিয়ে দেওয়া হবে। স্ট্যাডলারের এই পেনের নাম বেভেরিয়া। জার্মানির সর্ববৃহৎ রাজ্যের নামেই পেনের নাম। জানা গেল, জার্মানির এই সংস্থার পথ চলা শুরু ১৮৩৫ সালে। প্রথমে তারা পেনসিল তৈরি করত। এখন পৃথিবীর পেন প্রস্তুতকারক সংস্থার মধ্যে অন্যতম এই সংস্থা। পেনের মেলায় অনেকেই দেখেছেন। তুলেছেন ছবিও। কিন্তু কেনার দুঃসাহস দেখাননি কেউই! বিক্রি হবে আদৌ? সব কলম তো সবার জন্য নয়। বিশ্বখ্যাত জার্মান ফুটবলার থমাস মুলার লেখালেখি করেন এ পেন দিয়েই। আর প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ঝরণা কলমের দাম ৫৬ হাজার। তেমনই কোনও সমঝদার হয়তো খুঁজে নেবে পেন, জানিয়েছেন সংস্থার কলকাতার কর্মচারী প্রশান্ত সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.