অর্ণব আইচ : সোনা দিয়ে তৈরি গলার হারে ৯৭টি হীরে। এই ‘সাত রাজার ধন এক মানিক’ই টার্গেট ছিল আন্তঃরাজ্য এক চুরি চক্রের পাণ্ডার। রীতিমতো লোক নিয়োগ করে ৫০ লাখ টাকা দামের এই হীরের হারটি হাতিয়ে নেয় মান্নান শেখ। শেষ পর্যন্ত নিয়োগ করা সেই পালিশ মিস্ত্রির একটি ফোন নম্বরই ধরিয়ে দিল তাকে। বহুমূল্য এই হীরের হারটি নিয়ে যেতে মুম্বই থেকে বিমানে করে কলকাতা এসেছিল মান্নান। কিন্তু তার আগেই বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ধরে ফেলে তাকে। হুগলির গুপ্তিপাড়ায় মান্নানের বাড়ির উঠোনে লুকানো ছিল ওই হীরের হার। তিন ফুট মাটি খুঁড়ে ওই মূল্যবান হার উদ্ধার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, গিরিশ পার্ক থানা এলাকার সরকার লেনে এক কারিগরকে ওই হীরের হারটি পালিশ করতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই কারিগর এক মিস্ত্রিকে দেন কাজটি করতে। মাসখানেক আগে কাজে যোগ দিয়েছিল সে। কেউ ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে ওই মিস্ত্রি আসলে হীরে চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত। সেই চক্রের মূল কাণ্ডারির নিয়োগ করা এক চোর। ওই চোরাই হীরের কারবারি মান্নান শেখের বাড়ি গুপ্তিপাড়ায় হলেও তার আসল কাজকর্ম মুম্বইয়ে। ওই মিস্ত্রিকে বলা হয়েছিল, সোনা ও হীরের হার চুরি করতে পারলে সে পাবে ২৫ হাজার টাকা। আর তাতেই সে রাজি হয়ে যায়। কাজ করার ফাঁকে হাতিয়ে নেয় ৫০ লক্ষ টাকা দামের হীরের হারটি। যদিও মিস্ত্রির অন্য কোনও পরিচয় ছিল না কারিগরের কাছে। ছিল শুধু একটি ফোন নম্বর। সেই সূত্র ধরেই লালবাজারের গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেন। তাতেই তাঁরা বুঝতে পারেন যে, আসলে এই চুরির পিছনে রয়েছে আন্তঃরাজ্য চক্রের পাণ্ডা।
চুরি করা হারটি মান্নানের কথায় ওই মিস্ত্রি লুকিয়ে রেখেছিল মাটির তলায়। বুধবার ওই হারটি হস্তগত করতে বিমানে করে কলকাতায় আসে মান্নান। আবার বিমানে করেই মুম্বইয়ে ফিরে গিয়ে জাভেরি বাজারে ওই হারটি বিক্রি করার ছক কষেছিল সে। বিমানবন্দরে নামার পরেই তাকে ধরে ফেলেন গোয়েন্দারা। তাকে সঙ্গে নিয়ে গুপ্তিপাড়ায় যান তাঁরা। সেখানে মাটি খুঁড়তেই উদ্ধার হয় ওই হার। এর আগে অন্যান্য শহরেও সে একইভাবে গয়না চুরির অভিযান চালিয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। পুলিশ সূত্রে খবর, মান্নানকে জেরা করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.