অভিরূপ দাস: দেশের বিভিন্ন অংশে পালিত হয় দেব দীপাবলি কার্তিক পূর্ণিমার দিন। এবছর তা পালিত হবে ২৫ ও ২৬ তারিখ। এই দিনে সবথেকে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে বারাণসীর (Varanasi) কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর ও ঘাট। লক্ষ লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে পালিত হয় এই দেব দীপাবলি। সেই দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষজন আসেন। এবার ঠিক সেই আদলেই ৫০০০-১০০০০ প্রদীপে খাস কলকাতার গঙ্গার ঘাটে পালিত হবে দেব দীপাবলি (Dev Deepawali)। ২৫ ও ২৬ নভেম্বর দুদিন। উপস্থিত থাকার সম্ভবনা আছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) বলেই খবর কলকাতা পুরসভা সূত্রে।
কথিত রয়েছে, আধ্যাত্মিক শক্তিলাভের শেষ মাস কার্তিক মাস। কার্তিক পূর্ণিমায় মহাদেব অর্ধনারীশ্বর রূপে ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই দিনটি হিন্দু ধর্মে (Hindu) বিশ্বাসী মানুষজন গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেন। অনেকে এই দিনটিকে ‘শিব দীপাবলি’ বলেও উল্লেখ করেন। মূলত এই দিনটি হিন্দি বলয়কে জাঁকজমক করে পালিত হয়। এই উৎসব খুব বড় করে পালিত হয় কাশীতে। দীপাবলি উৎসবের পর এই কার্তিক পূর্ণিমায় বারাণসী, কাশীর ঘাটগুলি লক্ষাধিক প্রদীপে আলোকিত করে দিনটি পালন হয়। ২০২১ সালে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে নতুন করিডোর উদ্বোধন করেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। তিনি এই মন্দিরের ‘দেব দীপাবলি’র দিনে আলোকজ্জ্বল ছবি নিজের X হ্যান্ডলে টুইটও করেছিলেন।
কলকাতা কর্পোরেশন (KMC) সূত্রে খবর, এবার কলকাতায় কার্তিক পূর্ণিমায় দেব দীপাবলিকে ঘিরে ফুটে উঠবে এক টুকরো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের আলোকময় ছবি। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেতে বেনারসের ঘাটে আরতির আদলেই কলকাতার বাজা কদমতলা ঘাট চলতি বছরে শুরু হয়েছে গঙ্গা আরতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই আরতি। দিনে দিনে উপচে পড়ছে দর্শকদের ভিড়। কলকাতা কর্পোরেশন সমস্ত ব্যবস্থাপনা করেছে। বেসরকারি ট্রাস্ট দেবোত্তর জয়চণ্ডী ঠাকুরানি ট্রাস্টকে মূল আরতির কর্মকাণ্ডের ভার দেওয়া হয়েছে কর্পোরেশনের তরফে। তারাই প্রতিদিন আরতি অনুষ্ঠান করেন। প্রতি শনিবার ভোগ বিতরন করা হয়। এবার প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা হয়েছে তাদের দিয়েই কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের দেব দীপাবলির দিন ঠিক যেমন প্রদীপ জ্বালিয়ে সাজানো হয়, এই ঘাটেও আরতির জায়গা-সহ আশপাশের তেমনভাবেই সাজানো হবে। এর জন্য আনুমানিক ৫০০০-১০,০০০ প্রদীপ জ্বালানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পুরসভার এক আধিকারিক জানান, ”গোটা পরিকল্পনা আমাদের তৈরি। এটা বাস্তবায়নে যাতে কোনও রকম ধাক্কা খেতে না হয়, তাই সরকারের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা চলছে। বিষয়টি জানিয়ে পৌর কমিশনার নবান্নে পাঠাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলা হবে, যাতে তিনি ওই দিনই ঘাটে উপস্থিত থাকেন। তাঁর ইচ্ছে অনুসারে এই আরতি শুরু হয়েছে। সেই আরতি এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এতটাই যে দর্শকদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। সব ঠিক ভাবে হলে এবার এক অন্য আলোকময় ছবি ফুটে উঠবে কলকাতায়।” লোকসভা ভোটের আগে বাংলায় খাস কলকাতায় এমন কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে ভোট রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.