ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) নির্দেশে চাকরি গেল ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের! এক ধাক্কায় কি বেকার হয়ে গেলেন ৩৬ হাজার মানুষ? চাকরি গেলই বা কাদের? নাকি এদের চাকরি ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
কবে পরীক্ষা? কবে নিয়োগ?
২০১৪ প্রাথমিক টেট পরীক্ষা নেয় পর্ষদ। এঁদের ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিচিউড টেস্ট হয় ২০১৬ সালে। সেবছরই প্যানেল প্রকাশিত হয়। সেই প্যানেলে মোট ৪২ হাজার ৫০০ জনের চাকরি হয়। এদের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার জন ছিলেন ডিএলএডে (D El Ed) প্রশিক্ষিত। বাকি ৩৬ হাজার ছিলেন অপ্রশিক্ষিত।
কেন বাতিল চাকরি?
সেসময় পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের চাকরি দেওয়ার পর শূন্যপদ অবশিষ্ট থাকলে তাতে নিয়োগ করা হবে অপ্রশিক্ষিতদের। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হল, যে ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৩৬ হাজার অর্থাৎ সিংহভাগই ছিলেন অপ্রশিক্ষিত। মাত্র সাড়ে ৬ হাজার ছিলেন প্রশিক্ষিত। অভিযোগ, ২০১৪ সালে মোট যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বেশ কিছু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরি পাননি, অথচ সংরক্ষণের নিয়ম না মেনে চাকরি দেওয়া হয়েছে অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের। পর্ষদ এই অপ্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার পর প্রশিক্ষণ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আরও অভিযোগ হল, প্রাথমিকে নিয়োগের যে মূল শর্ত, সেই অ্যাপটিচিউড টেস্টও প্যানেল প্রকাশ করার আগে নেওয়া হয়নি। শিক্ষকের চাকরি পরীক্ষার অন্যতম ধাপ অ্যাপটিটিউড টেস্ট। এই পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়াদের তিনি কীভাবে পড়াবেন, চক-ডাস্টার নিয়ে তা দেখাতে হয় চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু অভিযোগ, সেই নিয়োগের ক্ষেত্রে আদতে কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্টই নেওয়া হয়নি।
কাদের চাকরি বাতিল?
২০১৬ সালের প্যানেল প্রকাশ করার সময় যে ৩৬ হাজার জন অপ্রশিক্ষিত ছিলেন, তাদের সকলের চাকরি বাতিল হয়েছে। এরা পরে প্রশিক্ষণ নিলেও তা গ্রাহ্য হয়নি। যারা সেসময় প্রশিক্ষিত ছিলেন তাদের চাকরি বহাল।
চাকরিহারাদের এখন উপায়?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন, চাকরি হারালেও আগামী ৪ মাস নিজ নিজ স্কুলে যেতে পারবেন এই শিক্ষকরা। তবে তাঁরা আগের হারে বেতন পাবেন না। তাঁরা পার্শ্বশিক্ষকদের হারে বেতন পাবেন এই চার মাস। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও তাঁরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
নতুন নিয়োগের নির্দেশ:
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, এই ৩৬ হাজার পদে আগামী ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে। সেই নিয়োগের খরচ দরকার হলে নিতে হবে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওই ৩৬ হাজার চাকরিহারা অংশ নিতে পারবেন। যাঁরা প্রশিক্ষণহীন হয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেউ যদি এর মধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন তাহলে তিনি ইন্টারভিউতে বসতে পারবেন। যদি তাঁদের মধ্যে কেউ এখনও প্রশিক্ষণ না নিয়ে থাকেন তাহলে তিনি ইন্টারভিউতেও বসতে পারবেন না। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে চাকরিহারারা অংশ নেবেন, তাঁদের ফের ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নতুন করে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে তাঁরা চাকরি ফেরত পাবেন। কোনও ‘সার্ভিস ব্রেক’ হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.