পৌষালি কুণ্ডু: মারণ-জ্বরকে চিনতে পারা যায়নি ঠিকই৷ তবে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা করে লাভ নেই৷ পরিস্থিতি এখনও খারাপ হয়নি৷ শান্ত থাকুন৷ এমনটাই বলছে চিকিৎসকরা৷ বর্ষা পড়তে না পড়তেই অজানা জ্বরে কাঁপছে দক্ষিণবঙ্গ৷ গত তিনদিনে মৃত্যু হয়েছে চারজনের৷
ডেঙ্গু ভোল বদলেছে৷ স্ত্রী এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণের চরিত্র পাল্টেছে৷ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এর মিউটেশন হতে পারে৷ প্রায় প্রতি বছরই বর্ষায় ডেঙ্গুর হানায় জর্জরিত হয় মানুষ৷ এবারও সেটাই হচ্ছে৷ এই অসুখ সারানোর কোনও প্রতিষেধক নেই৷ মশার জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিরোধ করতে হবে৷ তবে পরিচিত ডেঙ্গুর প্রকৃতির সঙ্গে এর মিল নেই৷ অবশ্য জ্বর হওয়া মানেই ডেঙ্গু হয়েছে এমন ভাবনা সম্পূর্ণ ভুল৷ কিংবা প্লেটলেট কমার পরিণতি মৃত্যু, তাও নয়৷”
তবে জ্বর হলে দ্বিতীয়দিনেই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সুকুমারবাবু৷ তিনি জানান, রিপোর্টে প্লেটলেটের মাত্রা দেখে বোঝা যাবে ব্যাপারটা আদৌ অজানা ডেঙ্গু ফিভার কি না৷ প্লেটলেটের মাত্রা ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার থাকলে নিশ্চিন্তে থাকা যায়৷ ৫০ হাজারের কম হলে একটু চিন্তার৷ এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে হবে৷ আর প্লেটলেট ৩০ হাজারের কম হলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতে হবে৷ তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম৷
এদিন সুকুমারবাবু বলেন, “ডেঙ্গুর মতো এই জ্বরে আক্রান্ত কয়েকজনের দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে৷ এই লক্ষণ বেশ চিন্তার৷ রক্তক্ষরণ হলে সারা শরীর ফুলে যায়৷ ব্লাড ভেসেল থেকে ডায়ালিটুশেন হয়ে সিরাম বাইরে বেরিয়ে যায়৷ একে ব্লাড ভেসেল সিরাম ক্যাপিলিয়ারিস বলে৷ এরকম হলে আচমকা প্লেটলেট কমে যায়৷ তবে জ্বরের প্রকোপ তীব্র হলে ক্যাপিলিয়ারিস, রক্তক্ষরণ ও কিডনির জটিল সমস্যা হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে প্রাণনাশের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে জানান তিনি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.