সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহুদিন ধরেই ঘনিষ্ঠ বৃত্তে এ কথা বলে আসছেন তিনি। শনিবার আরও একবার, প্রকাশ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি তুললেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করুক কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী শনিবার তাঁর টুইটে লেখেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দু’জনেই দেশ ও বিশ্বের কাছে আদর্শ। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের কাছে আরজি জানিয়েছি, দু’জনের জন্মদিনকেই জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করা হোক।’ ১২ জানুয়ারি স্বামীজির জন্মদিবস। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি।
Swami Vivekananda and Netaji Subhash Chandra Bose are national and international icons. I have written a letter to the PM urging the GOI to declare both their birthdays (Jan 12 and Jan 23) national holidays
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 20, 2018
বস্তুত মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি আদতে বাংলারই বহু মানুষের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। কেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বা স্বামী বিবেকানন্দের মতো চরিত্রের জন্মদিবসকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করা হবে না, এই অনুযোগ বাংলার মানুষের বহুদিনের। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুই ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, জাতপাত-শ্রেণি ও লিঙ্গ বৈষম্যর উর্ধ্বে উঠে ভারতমায়ের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে। স্বামীজি শুধু এ দেশের মাটিতে নয়, বিদেশের মাটিতে আধ্যাত্মিকতাবাদের প্রচার করে দেশমাতৃকার মুখ উজ্জ্বল করেছেন। কিন্তু তুলনায় কতটুকু সম্মান তাঁদের দেওয়া হয়েছে স্বাধীনোত্তর ভারতে? শনিবার তৃণমূল ভবনে বসে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকে জাতীয় ছুটি হিসাবে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্রের কাছে বহুদিন আগেই দাবি তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দাবি অবিলম্বে মেনে নিক সরকার।’
গতবছর নেতাজির মৃত্যু রহস্যের সমাধানে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় কেন্দ্র জানায়, ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে নেতাজির। যদিও সে বিষয়ে পর্যাপ্ত কোনও তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয় মোদি সরকার। এতে প্রবল চটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ফেসবুকে লেখেন, ‘সম্প্রতি নেতাজি নিয়ে কেন্দ্র তথ্য দিয়েছে৷ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যে আমি অবাক ও হতাশ৷ নেতাজি আমাদের ভূমিপুত্র, গর্ব৷ তাঁর মাপের একজন মহান ব্যক্তিত্বকে নিয়ে কেন্দ্রের এই ঢিলেঢালা আচরণ মানায় না৷’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, শাহনওয়াজ কমিটি, বিচারপতি জি ডি খোসলা কমিটি ও বিচারপতি মুখার্জি কমিশনের তদন্ত থেকে পাওয়া তথ্যে নেতাজির মৃত্যুর প্রমাণ মিলেছে। ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট তাইওয়ানের তাইহোকু বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। গুমনামি বাবা বা ভগওয়ানজি যে নেতাজি নন তাও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উত্তরে খুশি হননি মুখ্যমন্ত্রী। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য আজও খোলসা হয়নি, তা সত্ত্বেও কীভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্তে পৌঁছল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বসু পরিবারের সদস্য চন্দ্র কুমার বসুও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.