সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্টেশনে পড়ে থাকা মায়ের মৃতদেহ। গায়ের চাদর ধরে জাগানোর চেষ্টা করছে শিশু। বিহারের মুজফ্ফরপুর স্টেশনের এই মর্মান্তিক ছবি বহুকাল ভারতবাসীকে নাড়া দেবে। এ মৃত্যু উপত্যকাই আমার দেশ, মর্মান্তিক ভিডিও শেয়ার করে এই বার্তাই দিচ্ছে নাগরিক সমাজ। শুধু এই ঘটনাই নয়, রেলের উদাসীনতায় বহু পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁর পরিজন শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে ঘরে ফেরার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। যা চোখে জল এনে দিচ্ছে দেশবাসীর। কিন্তু এমন স্পর্শকাতর ইস্যুকে ছোট-বিক্ষিপ্ত ঘটনা তকমা দিয়ে সমালোচনার মুখে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মুণ্ডপাত হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির সভাপতির। কী বলেছিলেন তিনি? অনাহার, প্রবল গরম এবং তেষ্টায় লকডাউনের মধ্যে বিশেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরার সময় মৃত্যু হয়েছে বহু শ্রমিকের। একে নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে টিকিট কাটতে হচ্ছে। তার ফলে রেল না দিচ্ছে খাবার না জল। যার ফলে দীর্ঘ পথ ট্রেনে যাওয়ার সময় মৃত্যু হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। তেমনই হয়েছে বিহারের মুজাফ্ফরপুর স্টেশনে। এর জন্য রেলের উদাসীনতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে সবাই। কিন্তু এতে রেলের গাফিলতি মানতে নারাজ দিলীপের পালটা সাফাই, ‘কিছু দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এর জন্য রেলকে দোষ দেওয়া যায় না। শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে রেল যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এগুলো ছোট-বিক্ষিপ্ত ঘটনা।’
এই মন্তব্যের পরই নিন্দার ঝড় উঠেছে সবমহলে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্রে বিজেপির সরকার না থাকলে রেলের এই উদাসীনতাকে তখনও ছোট-বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলতে পারতেন তো দিলীপবাবুরা? তখন তো পথে নেমে অবরোধ-বিক্ষোভে শামিল হতেন বিজেপি নেতারা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় তোপ দেগেছেন দিলীপ ঘোষকে। বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ কেন্দ্র। পরিকল্পনাহীনভাবে লকডাউনের ফলে মূল্য চোকাতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। আর বিজেপি নেতারা ঔদ্ধত্য দেখিয়ে বলছেন, কিছুই হয়নি।’ সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা মহম্মদ সেলিম তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘পরিযায়ীদের হাহাকার প্রমাণ করে দিচ্ছে মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই মোদি সরকারের কাছে। দিলীপ ঘোষদের মতো নেতারা যাই হোক না কেন বারবার বলবেন, বিজেপির আমলে সব ঠিক হচ্ছে। এরা লজ্জা-শরম খেয়ে বসে আছে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.