স্টাফ রিপোর্টার: ‘সিরোসিস অফ লিভার’। পেটে জল জমে যাচ্ছিল। অসুস্থ মাকে বাঁচাতে নিজের লিভারের এক তৃতীয়াংশ মাকে দান করল মেয়ে। হায়দরাবাদে ঘুরতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বসিরহাটের দেবী ঘোষ। ঘন ঘন বমি হচ্ছিল। কিছুতেই পেটের যন্ত্রণা কমছিল না। হায়দরাবাদের হাসপাতালই বলে দেয়, ‘সিরোসিস অফ লিভার’ হয়েছে ৪৩ বছরের মহিলার।
ঘোষ পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। চোখের সামনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। ‘সিরোসিস অফ লিভার’ মানে তো মৃত্যু পরোয়ানা! প্রতিস্থাপনই যে একমাত্র পথ তা পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন ডাক্তারবাবুরা। কিন্তু ‘ডোনার’? অবশেষে শাপমুক্তির পথে দেবী। নিজের লিভারের তিনভাগের একভাগ কেটে মাকে দান করলেন মেয়ে ঐন্দ্রিলা ঘোষ। বেলঘরিয়ার ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের এমএসসি-র ছাত্রী রবিবারই মায়ের সঙ্গে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। মঙ্গলবার সকাল থেকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। মেয়ের লিভার থেকে ৩৫ শতাংশ কেটে মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর দু’জনকেই আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলেই হাসপাতালের তরফে দাবি করা হয়েছে।
বেশ কিছুদিন আগেই অঙ্গ-প্রতিস্থাপনের ‘রেওয়াজ’ শুরু হয়েছে কলকাতায়। তবে, এতদিন অঙ্গদানের নজির ছিল মৃত্যুর পর। এরই মধ্যে জীবিত মানুষের লিভারের অংশ কেটে আরেক জনের শরীরে বসানোর ঘটনা নজর কেড়েছে। যদিও এই ঘটনা নতুন নয়। পিজি হাসপাতালেই বাবার লিভারের অংশ নিয়ে নতুন জীবন পেয়েছে রওশন আলি। দেবী ঘোষের আগে এমন তিনটি উদাহরণ রয়েছে। দেবীর মামা তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, “হায়দরাবাদের হাসপাতালে কোনও উন্নতি না হওয়ায় খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সাড়ে চার মাস আগে ডা. অভিজিৎ চৌধুরিকে দেখায়। ওঁর অধীনেই এতদিন চিকিৎসা চলেছে। প্রতিস্থাপনের জন্য ব্রেন ডেথ হওয়া রোগীর ‘লিভার’-এর ব্যবস্থাও হয়েছিল। কিন্তু ঐন্দ্রিলা বেঁকে বসেন। জানান, ওঁর লিভারের অংশই মায়ের শরীরে বসানো হবে। মেয়ের ইচ্ছাতেই এই অস্ত্রোপচার।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.